আপনারা এত উশৃঙ্খলতা করছেন কেন? হেফাজতের নেতাকে বিচারক
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মুফতি শাখাওয়াত হোসাইন রাজীসহ তিনজনের রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে আদালত বলেছেন, ‘আপনারা দেশে এত উশৃঙ্খলতা সৃষ্টি করছেন কেন?’
রাজধানীর মতিঝিলে শাপলাচত্বর ঘেরাও ও হামলা, ভাঙচুর এবং সংঘর্ষের ঘটনায় ২০১৩ সালে হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পল্টন থানার করা মামলায় গ্রেফতার শাখাওয়াত হোসাইন রাজীসহ তিনজনের রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) এ প্রশ্ন করেন বিচারক।
বিজ্ঞাপন
শুনানির শুরুতে মুফতি শাখাওয়াত হোসাইন রাজীসহ তিনজনকে বিচারক জিজ্ঞেস করেন, ‘তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী আছে কি-না?’ জবাবে তারা জানান, তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী নেই।
এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে মুফতি শাখাওয়াত হোসাইন বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় ইফতারের পরে তারাবির নামাজের আগে বাসা থেকে আমাকে ধরে নিয়ে আসে পুলিশ। যেখানে আমাদের রাখা হয়েছিল সেখানে নামাজের জায়গা ছিল না। রমজানের দিকে তাকিয়ে আমাদের জামিন দেন স্যার।’
বিজ্ঞাপন
এরপর বিচারক বলেন, ‘দেশে আপনারা এতো উশৃঙ্খলতার সৃষ্টি করছেন কেন?’ জবাবে মুফতি শাখাওয়াত হোসেন রাজ বলেন, ‘না স্যার, আমরা তো কোনো উশৃঙ্খলতার সৃষ্টি করিনি। আমরা ২০১৩ সালের এ ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানি না। এ ঘটনার সঙ্গে আমরা জড়িত নয়। দয়া করে আমাদের জামিন দেন স্যার।’
এ দিন দুপুরে ২০১৩ সালের পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে মুফতি শাখাওয়াত হোসাইনসহ তিন জনের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে হাজির করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভুইয়া পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
অপর আসামিরা হলেন- মুফতি ফখরুল ইসলাম ও মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম।
শুনানিতে অপর দুই আসামি বিচারককে বলেন, ‘স্যার আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। হেফাজতে আমাদের কোনো পদ নেই। আমরা মসজিদে ইমামতি করি। দয়া করে রমজান মাসের হেফাজতের উছিলায় আমাদের জামিন দেন।’
এরপর পল্টন থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিরোধিতা করে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এর আগে বুধবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় লালবাগ এলাকা থেকে মুফতি শাখাওয়াত হোসেন রাজীসহ অন্য দুজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
এদিকে, গত চার দিনে হেফাজতের চার কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (১১ এপ্রিল) মধ্যরাতে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে র্যাব ও ডিবির যৌথ অভিযানে আজিজুল হককে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রাতে অভিযান চালিয়ে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক মুফতি শরিফ উল্লাহকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওয়ারী গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মীর হাজিরবাগ এলাকা থেকে শরিফ উল্লাহকে গ্রেফতার করেছে।
মঙ্গলবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকা থেকে হেফাজতের নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক মুফতি বশির উল্লাহকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
টিএইচ/এফআর