পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী

পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতীর পুরো পরিবার অপরাধ কাজে জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (২৭ মে) মাহবুবুল হক চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতীর জামিন শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।

আদালত বলেছে, মামলার নথি থেকে দেখা যায়, মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী ১৫৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলার মূল অপরাধী। তিনি অপরাধ কার্যক্রমে পুরো পরিবারের সদস্যদের ব্যবহার করেছেন। পুরো পরিবারই অপরাধ কাজে জড়িত।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।

এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি ১৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতীকে জামিন দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

পরে গত ১ ফেব্রুয়ারি রাশেদ চিশতীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে তাকে লিভ টু আপিল করতে বলা হয়। জামিন চেয়ে লিভ টু আপিলের শুনানিতে আপিল বিভাগ আজ আদালত উপরোক্ত মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য আগামী মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন।

২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর ফারমার্স ব্যাংকের ১৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় করা মামলায় ব্যাংকটির নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীসহ (বাবুল চিশতী), মাহবুবুল হক চিশতীর স্ত্রী রুজী চিশতী, ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, ফারমার্স ব্যাংকের চাকরীচ্যুত এসভিপি জিয়া উদ্দিন আহমেদ ও চাকরীচ্যুত ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান খান বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল এ মামলা করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ব্যাংকিং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মাহবুবুল হক চিশতী ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তায় স্ত্রী, সন্তান ও নিজের নামে এবং নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় ২৫টি হিসাব খোলেন। পরে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের সহায়তায় গ্রাহকদের হিসাব থেকে পাঠানো ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকা ওই ২৫টি হিসাবে স্থানান্তর করেন। এসব টাকা নিজেদের হিসাবে স্থানান্তর, হস্তান্তর ও লেয়ারিংয়ের পাশাপাশি নিজেদের নামে কেনা শেয়ারের দাম পরিশোধ করেছেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, লেনদেনের একটি বড় অংশই হয়েছে গুলশান শাখা থেকে। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত বখশীগঞ্জ জুট স্পিনার্সের চলতি হিসাবে প্রায় ১৩৯ কোটি টাকা জমা হয়। এর পুরোটাই নগদে তুলে নেওয়া হয়। বাকি ২১ কোটি টাকা বিভিন্ন হিসাব থেকে লেনদেন হয়। মামলার পরপরই চিশতীসহ চারজনকে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে দুদক। অন্য তিনজন হলেন চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, ব্যাংকের এসভিপি জিয়াউদ্দিন আহমেদ এবং ফার্স্ট প্রেসিডেন্ট মাসুদুর রহমান খান।

এমএইচডি/এমএইচএস