লালমনিরহাটের বুড়িমারী উপজেলায় পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে শহিদুন্নবী জুয়েল নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এক আসামিকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। জামিন পাওয়া আসামির নাম মো. শরিফুল ইসলাম।

রোববার (৩০ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে জামিন আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট হাসান মাহমুদ খান।

নিহত শহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রীপাড়া এলাকার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ছিলেন। চাকরিচ্যুত হওয়ায় মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। 
শহিদুন্নবী জুয়েল গত বছর ২৯ অক্টোবর বিকেলে সুলতান রুবায়াত সুমন নামে এক সঙ্গীসহ বুড়িমারী বেড়াতে যান। বিকেলে বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করেন। কিন্তু পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে সন্দেহবশত জুয়েল ও সুলতান রুবায়াত সুমনকে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে আটকে রাখে স্থানীয় জনতা।

খবর পেয়ে পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, বুড়িমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখানে উপস্থিত হন। কোরআন অবমাননার দায়ে দুই যুবককে আটক করার গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় উত্তেজিত হয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের দরজা জানালা ভেঙে প্রশাসনের কাছ থেকে জুয়েলকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে মরদেহ টেনে পাটগ্রাম বুড়িমারী মহাসড়কে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়।

এ ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দল গত বছরের ১ নভেম্বর ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানায়, মসজিদে কোরআন অবমাননার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটিও কোরআন অবমাননার সত্যতা পায়নি।

জুয়েলকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে একটি মামলায় পাটগ্রাম উপজেলার সামসুদ্দিন ইসলামের ছেলে মো. শরিফুল ইসলামকে গত বছরের নভেম্বরে শুরুতেই গ্রেফতার করা হয়।

এমএইচডি/এফআর