আসমা ও আব্দুর রহমান

রাজধানীর দক্ষিণখান সরদার বাড়ি জামে মসজিদের সেপটিক ট্যাংক থেকে গার্মেন্টসকর্মী আজহারুলের (৪০) সাত টুকরো লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন নিহতের স্ত্রী আসমা ও মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান।

রোববার (৩০ মে) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক অনুজ কুমার সরকার তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেন। তারা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তিনি। দুজনই ৫ দিনের রিমান্ডে ছিলেন। 

আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ধীমান চন্দ্র মণ্ডল আসমার জবানবন্দি গ্রহণ করেন আর আব্দুর রহমানের জবানবন্দি গ্রহণ করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমান। দুজনের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জি আর) শাখা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

গত ২৬ মে দুই আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। তার আগের দিন ২৫ মে ইমাম আব্দুর রহমানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দেয় র‌্যাব।

কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আব্দুল মোত্তাকিম সাংবাদিকদের জানান, আজহারুলের স্ত্রীর সঙ্গে ইমাম আব্দুর রহমানের পরকীয়া সম্পর্কের পরিণতিতে খুন হন আজহারুল। গত ১৯ মে আজহারুলকে দক্ষিণ খানের সরদার বাড়ি মসজিদে ডাকেন ইমাম। সেখানে নিজের শয়নকক্ষে কোরবানির গরু জবাইয়ের ছুরি বের করে আজহারুলের গলায় চালিয়ে দেন তিনি। পরে লাশ গুম করার সুবিধার্থে আজহারুলের মরদেহকে ৭ টুকরো করে মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন ইমাম।

মসজিদ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে এবং সিঁড়িতে রক্তের দাগ দেখে স্থানীয়রা র‌্যাবকে খবর দেন। ২৫ মে (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেপটিক ট্যাংক থেকে আজহারুলের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক জানান, মাওলানা আব্দুর রহমান সরদারবাড়ি জামে মসজিদে ৩৩ বছর ধরে ইমামতি করে আসছেন। আজহারুলের চার বছরের ছেলে মসজিদের মক্তবে পড়ত। আজহারুল নিজেও তার কাছে কুরআন শিখেছেন। এই সুবাদে তার বাসায় প্রায়ই যাতায়াত করতেন ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমান। এরমধ্যে আজহারুলের স্ত্রী আসমার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে ইমামের। বিষয়টি আজহারুল জেনে গেলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ইমাম ও আসমা। ১৯ মে ইমামের কক্ষে পরিকল্পিতভাবেই ডেকে নেওয়া হয় আজহারুলকে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কি না সে বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করছে পুলিশ।

টিএইচ/এইচকে/জেএস