প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন /ফাইল ছবি

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‌‘সোশ্যাল কনটেক্সট (সামাজিক পরিস্থিতি) খুব খারাপ। যেকোনো বয়সের নারী ও শিশুরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। এটা ভাবিয়ে তোলার মতো।’

মঙ্গলবার (৮ জুন) শিশু ধর্ষণ মামলার এক আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানিকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সবচেয়ে মুখ্য বিষয় হলো কোনো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর তার বিচার হওয়া। অপরাধ সংঘটনের পর অপরাধীর বিচার হবে না এরকম পরিস্থিতির যেন সৃষ্টি না হয়। সেজন্য যেকোনো অপরাধের বিচারটাকেই বড় করে দেখা হয়। বিচারহীনতা যেন না থাকে।’

মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসে নেত্রকোনার মদনে পাঁচ বছরের এক শিশু ধর্ষণ মামলায় আসামি হুমায়ুন কবির রজতকে মৃত্যুদণ্ড দেন নেত্রকোনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত। ২০০২ সালে এই রায়ের পর আসামির মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। ২০০৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বয়স বিবেচনায় আসামির সাজা মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন করে দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আপিলে আসামির মৃত্যুদণ্ড বহালের আবেদন জানানো হয়।

আপিল শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) বিশ্বজিত দেবনাথ বলেন, ‘পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করেছেন এই আসামি। এর চেয়ে জঘন্য আর কী হতে পারে।’

আদালত বলেন, ‘ঘটনার সময় আসামির বয়স তো দেখছি ২৪/২৫ বছর। বয়স কম হলে ও পূর্ববর্তী কোনো অপরাধের রেকর্ড না থাকলে সেক্ষেত্রে সাজা কমানোর বিষয়ে আপিল বিভাগের বেশ কিছু রায় রয়েছে।’

বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, ‘সমাজে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে গেছে। সাজা হ্রাসের বিষয়টি নিয়ে এখন নতুন করে চিন্তাভাবনার সময় এসেছে।’

এ পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যেকোন অপরাধের বিচার হতেই হবে। বিচারহীনতার সৃষ্টি যেন না হয়। এই আসামির দোষী সাব্যস্তকরণ নিয়ে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। শুধু সাজা আরোপ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’

এরপরই আপিল বিভাগের সব বিচারপতিরা রাষ্ট্রপক্ষের সাজা বৃদ্ধির আপিল খারিজ করে দেন। 

এমএইচডি/ওএফ