নাসিরের মাধ্যমে সমাজের উঁচু শ্রেণির কালো মুখগুলো বেরিয়ে আসবে
আদালতে আসামি নাসির/ ছবি: ঢাকা পোস্ট
আসামি নাসির উদ্দিন ঘটনার বিষয়ে আংশিক তথ্য দিয়েছেন। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলে সমাজে যেসব উঁচু শ্রেণির কালো মুখ আছে সে মুখগুলো বেরিয়ে আসবে। তাই তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসির আদালতে মাদক মামলায় রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক উদয় কুমার মন্ডল এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে নাসিরসহ পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এর কিছুক্ষণ পরই বিচারক এজলাসে আসেন। এরপর শুনানি শুরু হয়। শুনানির শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু বলেন, সাভারের বোট ক্লাবে অভিনেত্রী পরীমণিকে হেনস্তা করা হয়। এ ঘটনায় সাভার থানায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেফতার করার জন্য খুঁজতে থাকেন। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নাসিরসহ পাঁচ আসামিকে উত্তরার একটি বাড়ি থেকে আটক করে। এরপর তাদের নিয়ে ওই বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করলে তাদের কাছ থেকে বিদেশী মদ ও ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে।
শুনানিতে আব্দুল্লাহ আবু আরও বলেন, মূলত আসামি নাসির উদ্দিন এই বাড়িটি আমোদ ফূর্তির জন্য ব্যবহার করতেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাড়িটি আসামি নাজমার কথিত এক ভাইয়ের। মূলত এই বাড়িটি আমোদ ফূর্তির জন্যই নাসির উদ্দিন ব্যবহার করতেন। যেখানে বর্তমান সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে, সেখানে আসামিরা বাড়িটিতে মদের আড্ডা করতেন। তাই তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে তিনি মনে করেন।
বিজ্ঞাপন
এরপর আসামি নাসির উদ্দিনসহ অপর আসামিদের পক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল বাতেন ও সেক্রেটারি হযরত আলী খান শুনানি করেন।
শুনানিতে তারা বলেন, আসামিরা নির্দোষ। শুধুমাত্র সাভারের ঘটনাটিকে টেকাল দেওয়ার জন্যই এই মাদক মামলার উদ্ভব হয়েছে। আসামি নাসির উদ্দিন একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে কোনো মাদক মামলা নেই। যেখান থেকে মাদক উদ্ধার করা হয়েছে ওই বাড়িটি তার নয়। যে কক্ষ থেকে মাদক উদ্ধার করা হয়েছে সেটাও তার নয়। তাকে (নাসির) রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। তাই তাদের রিমান্ড নামঞ্জুর করার জন্য আবেদন করছি।
এরপর উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক উদয় কুমার মন্ডলকে (গুলশান জোনাল টিম) কিছু বলার আছে কি না জিজ্ঞেস করেন। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আসামি নাসির উদ্দিন ঘটনার বিষয়ে আংশিক তথ্য দিয়েছেন। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলে সমাজে যেসব উঁচু শ্রেণির কালো মুখ আছে, সে মুখগুলো বেরিয়ে আসবে। তাই তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
পরে আদালত আসামি নাসির উদ্দিনের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
টিএইচ/এসএসএইচ