চিফ প্রসিকিউটর
শেখ হাসিনার উসকানিতে পা দেয়নি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী
এতোগুলো মানুষ হত্যার পরও শেখ হাসিনার আচরণে অনুশোচনা নেই বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, চব্বিশের জুলাই-আগস্টে এতগুলো মানুষ হত্যার পর বাংলাদেশে যে পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল। যেভাবে তিনি এত সংখ্যক মানুষকে আহত বা অঙ্গহানি করেছেন, বাংলাদেশকে বদ্ধভূমিতে পরিণত করেছিলেন এর জন্য কোনো অনুশোচনা নেই তার (শেখ হাসিনা)। উল্টো তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন যারা মামলা করেছেন, সাক্ষী দিয়েছেন তাদের হত্যা করার ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়ার সমাপনী দিন ছিল আজ।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, কয়েকদিন আগে তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশে একটা গৃহযুদ্ধ লাগানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি সেনাবাহিনীকে উসকানি দিয়েছেন যে তোমাদের কিছু কিছু অফিসারের বিচার হচ্ছে, তোমরা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও। কিন্তু দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সেই উসকানিতে পা দেয়নি। মানুষ এই উসকানি বুঝতে পেরেছেন। তারাও পা দেননি। শুধুমাত্র যাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সুস্পষ্ট প্রমাণ আছে বিচারের প্রক্রিয়ায় তাদের আনা হয়েছে। সেনাবাহিনী নিজের আইনের শাসনের প্রতি, ল' অব দি ল্যান্ডের প্রতি সুদৃঢ় অঙ্গীকারের কথা বলেছেন। সেটা প্রমাণ করেও তারা দেখিয়েছেন। সুতরাং তাদের এসব উসকানি বিফলে গেছে।
তিনি বলেন, এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আসামিরা প্রমাণ করেছেন যে তাদের সামান্যতম অনুশোচনা নেই। অনুশোচনাহীন এমন হত্যাকারীদের ব্যাপারে আদালতের দৃষ্টিভঙ্গি স্বচ্ছ থাকা উচিত যে, তারা কোনো রকমের অনুকম্পা পাওয়ার যোগ্য নন। এটাই আমাদের সর্বশেষ বক্তব্য ছিল। আমি বলেছি এ অপরাধের বিচার হচ্ছে— নেভার এগেইন। অর্থাৎ বাংলাদেশে কখনো আর এমন দিন যেন ফিরে না আসে। এভাবে শিশুদের রাজপথে জীবন দিতে না হয়। ভয় ও আতঙ্কের দিন বাংলাদেশে কখনো ফিরে না আসে। আদালত আগামী ১৩ নভেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেছেন। ওইদিন ঘোষণা করবেন কবে রায় হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার ও শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
এমআরআর/এমজে