জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কারফিউ দিয়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উসকানি দেওয়াসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে চলছে প্রসিকিউশনের শুনানি। 

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ শুনানি শুরু হয়। প্যানেলের বাকি দুই সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে রয়েছেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা। 

এ মামলায় সালমান-আনিসুলের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জের ওপর শুনানির কথা ছিল ১৭ ডিসেম্বর। কিন্তু অন্য মামলা থাকায় প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি পিছিয়ে আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। 

 প্রসিকিউশনের শুনানি সম্পন্ন হলে করবেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। যদিও এ মামলায় সালমান-আনিসুলের হয়ে লড়তে বিদেশি আইনজীবী চাওয়া হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর এ আবেদন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। এ বিষয়ের ওপর আজ শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

বিদেশি আইনজীবী চাওয়া নিয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দিতে হলে প্রথমে বার কাউন্সিলের অনুমতি নিতে হয়। এরপর নিতে হবে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি। তাজুল ইসলামের এ কথার বিরোধিতা করেন মনসুরুল হক। তার মতে, আইনানুযায়ী ট্রাইব্যুনালের অনুমতির পর নিতে হবে বার কাউন্সিলের।

এর আগে, ৪ ডিসেম্বর সালমান ও আনিসুলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে প্রসিকিউশনের শুনানি শেষে অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ফোনালাপ করেন আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান। ফোনালাপের একপর্যায়ে কারফিউ চলাকালে আন্দোলনকারীদের শেষ করে দিতে হবে বলে জানান তারা। তাদের এ বক্তব্যের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। সালমান-আনিসুলের এই বক্তব্যটি হত্যাকাণ্ডে উসকানি হিসেবে কাজ করেছে বলে অভিযোগ প্রসিকিউসনের। 

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট পালাতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক। এরপর থেকে হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলা কাঁধে নিয়ে কারাগারে রয়েছেন তারা।

এমআরআর/এমএসএ