হাদি হত্যাকাণ্ড : প্রধান আসামি ফয়সালের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ এ আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ আসামির বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদনে বলা হয়েছে, গুপ্তচরের মাধ্যমে সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে যে, এজাহারনামীয় পলাতক আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ যেকোনো সময়ে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। এজন্য স্থল, নৌ ও বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে পলায়নকালে তাকে আটকের প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তার বিদেশ গমন রোধ/নিষেধাজ্ঞা আরোপের আদেশ প্রয়োজন।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটে পল্টন থানাধীন বক্স কালভার্ট রোডের শরিফ ওসমান হাদির উপর দুষ্কৃতিকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অপারেশন শেষে এভারকেয়ারে পাঠানো হয়। পে উন্নত চরেকিৎসার জন্য গত ১৫ ডিসেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় গত ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, হত্যাচেষ্টা, বিপজ্জনক অস্ত্র ব্যবহার করে স্বেচ্ছায় গুরুতর আঘাত, দুষ্কর্মে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়। গত ২০ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা (হত্যা) সংযোজনের আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সিদ্দিক আজাদ।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটে মতিঝিল মসজিদ থেকে জুমার নামাজের পর প্রচারণা শেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাওয়ার পথে পল্টন থানাধীন বক্স কালভার্ট রোডের পাকা রাস্তার উপর শরিফ ওসমান হাদির পিছন থেকে অনুসরণ করে আসা মোটরসাইকেলে থাকা আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদ ও তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামি শরিফ ওসমান হাদিকে চলন্ত অবস্থায় হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়। আহত ওসমান হাদিকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থা অবনতি ঘটলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে সিঙ্গাপুর নিয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গত ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সময় রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি মারা যান।
এনআর/জেডএস