আনুশকা হত্যা: দিহানের ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ
পুলিশ হেফাজতে দিহান
রাজধানীর কলাবাগানে ডলফিন রোডে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিন ওরফে শাহনূরীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার ইফতেখার ফারদিন দিহানের ডিএনএ টেস্ট করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১০ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াছমিন আরা এ আদেশ দেন। কলাবাগান থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সূত্র জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামি ইফতেখার ফারদিন দিহানের ডিএনএ টেস্ট করার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক এ আদেশ দেন।
এর আগে শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) ইফতেখার ফারদিন দিহান ধর্ষণের পর খুনের ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
বিজ্ঞাপন
• কোচিংয়ের পেপার আনতে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়েছিল আনুশকা
• আসলে সে গিয়েছিল কলাবাগানের ডলফিন রোডে বন্ধু দিহানের বাসায়
• ওই বাসা থেকেই অজ্ঞান অবস্থায় আনুশকাকে নেওয়া হয় হাসপাতালে
• হাসপাতালে নেওয়ার পর আনুশকাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক
• মামলা হয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে
• দায় স্বীকার করে দিহানের জবানবন্দি
গত বৃহস্পতিবার রাতে কলাবাগান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আনুশকার বাবা মো. আল আমিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং-৬।
মামলার এজাহারে মো. আল আমিন অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে তিনি ও তার স্ত্রী কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন। বেলা সাড়ে ১১টায় আনুশকা কোচিংয়ের পেপার আনতে বাইরে যাচ্ছে বলে ফোনে তার মাকে জানায়। বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে আনুশকা বাসা থেকে বের হয়ে যায়।
এজাহারে বলা হয়, দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে দিহান আনুশকার মাকে ফোন দেন। তিনি ফোনে জানান, আনুশকা তার বাসায় গিয়েছিল। সেখানে হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়লে তাকে রাজধানীর আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। এ কথা শুনে আনুশকার মা ১টা ৫২ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছান। সেখানে গিয়ে তিনি কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে জানতে পারেন আনুশকাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
আনুশকার বাবা এজাহারে আরও বলেন, তারা বিভিন্নভাবে জানতে পেরেছেন, দিহান তার মেয়েকে প্রেমে প্রলুব্ধ করে ধর্ষণের উদ্দেশে বেলা ১২টার দিকে বাসায় ডেকে নিয়ে যান। পরে দিহান ফাঁকা বাসায় তার মেয়েকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে আনুশকা অচেতন হয়ে পড়ে। পরে ধর্ষণের ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে দিহান আনুশকাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে শুক্রবার বিকেলে আনুশকার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ফরেসনিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে আনুশকার মৃত্যু হয়েছে। তার যৌনাঙ্গ ও পায়ুপথ দুই দিক দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। ময়নাতদন্তে দেহের দুই অংশেই আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে ধস্তাধস্তির কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
চেতনানাশক কিছু খাওয়ানো হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, চেতনানাশক কোনো কিছু খাওয়ানো হয়েছিল কি না তা জানার জন্য নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। ঘটনাস্থলে একাধিক ব্যক্তি ছিল। তাদের ডিএনএ নমুনা এবং ভিসেরাও সংগ্রহ করা হয়েছে।
ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় শুক্রবার রাতে দিহানের তিন বন্ধুকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
টিএইচ/এইচকে