হাইকোর্ট

রাজধানীর পল্লবীর বেনারসি কারিগর মো. আরমানকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের আদেশ ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত।

মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ননী এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিস দাশ গুপ্ত। আরমানের মায়ের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব।

আরমানকে আসামি করে কারাগারে রাখার ঘটনায় পল্লবী থানার সাবেক চার পুলিশ সদস্যকে চলতি দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে যুক্ত করতে গত ১০ জানুয়ারি হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখেন চেম্বার আদালত।

আরমানকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে পুলিশ মহাপরিদর্শককে দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে শুনানির জন্য ১২ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।

ভুল আসামি হয়ে প্রায় ৪ বছর ধরে কারাগারে থাকা রাজধানীর পল্লবীর বেনারসি কারিগর মো. আরমানকে গত ৩১ ডিসেম্বর মুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে পুলিশ মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেওয়া হয়। আরমানকে আসামি করার ঘটনায় পল্লবী থানার সাবেক চার পুলিশ সদস্যকে চলতি দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে যুক্ত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। চার কর্মকর্তা হলেন- পল্লবী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির ও মো. নজরুল ইসলাম এবং সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম খান ও মো. রাসেল।

এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

ভুল আসামি হয়ে প্রায় ৪ বছর ধরে কারাগারে থাকা আরমানকে কেন মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে গত বছরের ২৩ এপ্রিল রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে নির্দোষ আরমানকে কারাগারে রাখায় কেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়।

ওই বছরের ২১ এপ্রিল আরমানকে আদালতে হাজিরের নির্দেশনা ও মুক্তি চেয়ে রিট দায়ের করা হয়।

ল’অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব রিট আবেদনটি দায়ের করেন।

রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পল্লবীর ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

গত বছরের ১৮ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে ‘কারাগারে আরেক জাহালম’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বেনারসি কারিগর মো. আরমান নির্দোষ হয়েও ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে গত ৩ বছর ধরে কারাভোগ করছিলেন। রাজধানীর পল্লবী থানার একটি মাদক মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাদক কারবারি শাহাবুদ্দিন বিহারি এ মামলার প্রকৃত আসামি। কিন্তু তার পরিবর্তে সাজাভোগ করছেন আরমান। শুধু বাবার নামে মিল থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে শাহাবুদ্দিন নামে আদালতে সোপর্দ করে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। অন্যদিকে প্রকৃত আসামি শাহাবুদ্দিন কারাগারের বাইরে দিব্যি মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন।

এমএইচডি/এসআরএস