পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের এসপি মোকতার হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা নিতে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে আদালতে আবেদন করেন এক নারী পুলিশ পরিদর্শক। আদালত ওই অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করতে উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক কামরুন্নাহারের আদালত এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্র এবং বাদীর আইনজীবী সালাহ উদ্দিন খান ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আবেদনে বাদী অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালে বাদী ও আসামি দুজনই জাতিসংঘ শন্তিরক্ষী বাহিনীতে সুদানে কর্মরত ছিলেন। ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর দুপুরে আসামি বাদীর বাসায় গিয়ে বাদীর ব্যবহৃত গাড়ির চাবি চান। বাদী গাড়ির চাবি ইউনিফর্মের পকেট থেকে আনতে গেলে আসামি পেছন থেকে তাকে জাপটে ধরেন এবং ধর্ষণ করেন। এরপর ধর্ষণের ঘটনা কাউকে না জানাতে আসামি বিভিন্নভাবে বাদীকে ভয়ভীতি দেখান এবং হুমকি-ধামকি দেন। এর দুই দিন পর ওই বছরের ২২ ডিসেম্বর আসামি পুনরায় পূর্বের ঘটনা ‘ভুল হয়েছে’ বলে বাদীর বাসায় যান এবং ওইদিনও একই কায়দায় তিনি বাদীকে ধর্ষণ করেন। এই ঘটনাও কাউকে না জানাতে আসামি বাদীকে হুমকি দেন। যদি বাদী কাউকে এ ঘটনা জানান তাহলে ভীষণ ক্ষতি হবে তার- এমন ভয় দেখান।

বাদী আরও অভিযোগ করেন, ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি মৌখিকভাবে ‘কলেমা’ পড়ে বিয়ে করার কথা বলে বাদীকে আবারও ধর্ষণ করেন আসামি। তখন আসামি প্রতিশ্রুতি দেন, দেশে ফিরলে তাকে রেজিস্ট্রি কাবিন করে বিয়ে করবেন। এরপর দেশে এসেও একই প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঢাকার হোটেল লা মেরিডিয়ানে দুই দফায় বাদীকে ধর্ষণ করেন আসামি। 

পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় বাদী নিকাহ রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে বাদীকে গ্রহণ করার তাগিদ দিলে আসামি তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং তাকে এড়িয়ে যেতে থাকেন।

এ অবস্থায় এ বছরের ২১ এপ্রিল বাদী আসামির রাজারবাগের সরকারি বাসায় গিয়ে আশ্বাস অনুযায়ী বিয়ের কাবিননামা সম্পন্ন করার জন্য পুনরায় তাগিদ দেন। এসময় আসামি মোকতার হোসেন, তার স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে বাদীকে মারধর করেন এবং হুমকি-ধামকি দেন।

মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, এ বিষয়ে গত ১০ আগস্ট উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ তার মামলা নেয়নি। তারা আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।

এছাড়া এ বিষয়ে পুলিশ ডিপার্টমেন্টে একটি অভিযোগ করেছেন বাদী। অভিযোগটির এখনো মীমাংসা হয়নি, তদন্ত চলছে।

অভিযুক্ত পুলশ কর্মকর্তা মোকতার হোসেন বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের এসপি হিসেবে বাগেরহাটে কর্মরত আছেন।

টিএইচ/জেডএস/জেএস