মানিলন্ডারিং আইনে দায়ের করা মামলায় ফরিদপুরের কানাইপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলায়েত ফকির ও ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মজনুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ আদালতে হাইকোর্টের নির্দেশ মতে ৪ সপ্তাহের  জামিনের মেয়াদে শেষে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, এ মামলায় গ্রেপ্তার বরকত ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কথা মামলায় উঠে আসে। পরে আসামিরা হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। আজকে চার সপ্তাহ জামিন শেষে তারা আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের জন্য আত্মসমর্পণ করে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত বছরের ২৬ জুন ঢাকার কাফরুল থানায় অর্থ পাচারের অভিযোগ বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধনী–২০১৫–এর ৪ (২) ধারায় এ মামলা করা হয়।

এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন সাজ্জাদ ও ইমতিয়াজ। এ ছাড়া মাদক ব্যবসা, ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ করেছেন তারা। এসি, নন–এসিসহ ২৩টি বাস, ড্রাম ট্রাক, বোল্ডার, পাজেরো গাড়ির মালিক হয়েছেন। টাকার উল্লেখযোগ্য অংশ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেন তারা।

এজাহারে আরও বলা হয়, প্রথম জীবনে এ দুই ভাই রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে এক বিএনপি নেতার ফাইফরমায়েশ খাটতেন। তখন তাদের সম্পদ বলতে তেমন কিছুই ছিল না।

এজাহারে আরও বলা হয়, গত বছরের ১৮ জুন তিনি (এস এম মিরাজ) এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়ে তদন্ত শুরু করেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এ দুই ভাই অন্তত দুই হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন করেছেন। গত ১৬ মে রাতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। সুবল সাহার বাড়ি শহরের গোয়ালচামট মহল্লার মোল্লা বাড়ি সড়কে। এ ঘটনায় গত ১৮ মে সুবল সাহা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন।

গত বছরের ৭ জুন রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার মামলার আসামি হিসেবে শহরের বদরপুরসহ বিভিন্ন মহল্লায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ সাজ্জাদ হোসেন, তার ভাই ইমতিয়াজ হাসানসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।

টিএইচ/এসএম