নারায়ণগঞ্জের বন্দরে প্রবাসী উজ্জ্বল মিয়া হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সুজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। 

যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- আবুল কাশেম (৫০), কালু (৪৮) ও আজমান (২৬)।

সোমবার (১ নভ্ম্বের) আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মন্টু চন্দ্র ঘোষ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুনুর রশিদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমদ হিরো। আসামি কাশেমের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন শাহনাজ হক।

সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমদ হিরো বলেন, আসামিদের মধ্যে আবুল কাশেম পলাতক রয়েছেন।

এর আগে ২০১৫ সালের ৫ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের বন্দরে প্রবাসী উজ্জ্বল মিয়া হত্যা মামলার রায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রথম বিচারক মিয়াজী শহীদুল আলম চৌধুরী সে সময় এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বন্দর উপজেলার সোনাকান্দা এলাকার আবুল কাশেম (৫০) ও তার ছেলে সুজন (২৪), ওই এলাকার কালু (৪৮) ও তার ছেলে আজমান (২৬)। হত্যার পরিকল্পনায় জড়িত থাকার দায়ে পৃথক ধারায় আসামি সুজনকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।  

২০১২ সালের ১৪ জুন বন্দর উপজেলার সোনাকান্দা বড় মসজিদ এলাকায় প্রবাসী মো. উজ্জ্বল মিয়ার কাছ থেকে সিগারেটের আগুন ধরানোর জন্য একটি লাইটার ধার নেন সুজন। দুদিন পর সুজনের কাছ থেকে লাইটার ফেরত চান উজ্জ্বল। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সুজন, কালু, আজমান, আবুল কাশেমসহ অন্য আসামিরা উজ্জ্বলকে মারধর করেন এবং একপর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় উজ্জ্বলের বাবা লুৎফর রহমান বাদী হয়ে সুজনসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। 

পরে মৃত্যৃদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে এবং আসামিরা নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন।

এমএইচডি/জেডএস