এমসি কলেজে গণধর্ষণ: আদালত পরিবর্তনের আবেদনের শুনানি রোববার
সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ গণধর্ষণের মামলার বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে আবেদনের শুনানির জন্য আগামী রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানির জন্য এদিন ধার্য করেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম লিটন।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ গণধর্ষণের মামলার বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন মামলার বাদী। আবেদনকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম লিটন বলেন, বাদী ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশংকা থেকে এই আদালত পরিবর্তনের আবেদন করেছেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৫২৬ ধারায় আদালত পরিবর্তনের এই আবেদন করা হয়। এতে বলা হয়েছে, সিলেটের অন্য কোনো ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য মামলাটি যেন বদলির আদেশ দেওয়া হয়।
২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। ওই রাতেই ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে শাহ পরান থানায় মামলা করেন। গত ৩ ডিসেম্বর সাইফুরসহ ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোহিতুল হক চৌধুরী অভিযোগপত্র আমলে নিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
এদিকে এমসি কলেজের ওই ঘটনায় হাইকোর্টে দাখিল করা যৌথ অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোস্টেল সুপার ও প্রহরীদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল। তাই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে এমসি কলেজের অধ্যক্ষও কোনোভাবেই ওই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গণধর্ষণের পেছনে মূলত হোস্টেলের বর্তমান তত্ত্বাবধায়করা, হোস্টেলের মূল গেটের ডে গার্ড, ৫ নম্বর ব্লকের ডে গার্ড ও নাইট গার্ড (নৈশপ্রহরী) এবং ৭ নম্বর ব্লকের ডে গার্ড ও নাইট গার্ডের দায়িত্বে অবহেলা ছিল।
প্রতিবেদেনে আরও বলা হয়েছে, ঘটনার সময় কলেজ বন্ধ থাকার পরও কয়েকজন ছাত্র ও প্রাক্তন ছাত্র হোস্টেলে অবস্থান করেন। একজন প্রাক্তন ছাত্র ৫ নম্বর ব্লকের হোস্টেল সুপারের বাসভবন দখল করে থাকেন। প্রাক্তন ওই ছাত্ররা অবৈধভাবে কলেজে হোস্টেলের সিট দখল করে থাকার কারণে এবং প্রাক্তন ছাত্র সাইফুর রহমান হোস্টেল সুপারের বাসভবন জোর করে দখল করে থাকার কারণেই তারা কলেজের হোস্টেল এলাকায় গণধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ করার সাহস পান। ফলে ঘটনার তারিখে হোস্টেল ক্যাম্পাসে ওই ঘটনার নেপথ্যে মূলত হোস্টেল সুপারদের তদারকির ঘাটতি ও দায়িত্বে অবহেলাই দায়ী। তবে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে কলেজের অধ্যক্ষের ওপরও এ দায়ভার চলে আসে।
প্রতিবেদনে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ১৫ দফা সুপারিশ করে বলা হয়েছে, কলেজের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের চাহিদার ভিত্তিতে হোস্টেলে আসন নিশ্চিত করতে হবে এবং অছাত্র বা প্রাক্তন ছাত্রদের হোস্টেলে বসবাস কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
এমএইচডি/জেডএস