প্রতীকী ছবি

রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) এক ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর পর তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ৪ জনের নাম এবং একজনকে অজ্ঞাত উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারভুক্ত অজ্ঞাত ওই আসামি সাফায়েত জামিল হলফনামা দিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে আইনজীবীর মাধ্যমে হলফনামা দিয়ে সাফায়েত আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসি জামিন নামঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিন হলফ নামায় সাফায়েত জামিল বলেন, গত ২৮ জানুয়ারি আমার বন্ধু আরাফাতের আমন্ত্রণে উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় প্রাইস টাওয়ারের ব্যাম্বু সুট রেস্টুরেন্টে যাই। রেস্টুরেন্টে আরাফাত ও তার পরিচিত অন্য বন্ধু মুর্তজা রায়হান চৌধুরী তার বান্ধবীকে নিয়ে আসেন। তাদের সাথে আমার কোনো পরিচয় ছিল না। তারা হালকা নাস্তার পর মদপান করে চলে যায়। আমি অসুস্থ বোধ করলে রেস্টুরেন্ট থেকে আমার বাসায় চলে যাই। দুইদিন পর ৩০ জানুয়ারি আমার বন্ধু আরাফাত মারা যায়। এরপর খবরের মাধ্যমে জানতে পারি আরাফাতের বন্ধু মুর্তজা রায়হানের বান্ধবীও মারা গেছেন।

তিনি হলফনামায় আরও উল্লেখ করেন, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আমার বাসায় অভিযান চালায়। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি আরাফাতসহ চারজন ও অজ্ঞাত নামা একজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমি উপলব্ধি করলাম যেহেতু পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আমার বাসায় অভিযান চালায় সেহেতু আমি অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে নিজেকেই সন্দেহ করছি। আমি নিজেকে এ মামলায় সম্পৃক্ত হতে ইচ্ছুক।

আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ৩১ জানুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভুইয়ার আদালত মর্তুজা রায়হান চৌধুরী ও নুহাত আলম তাফসিরকে পাঁচদিনের রিমান্ডে পাঠান।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আসামি আরাফাতের বাসায় যান। আরাফাতের বাসায় স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী ও রায়হান একসঙ্গে উবারে করে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী (তরুণ) উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করান। মদ্যপানের একপর্যায়ে  তরুণী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নুহাত নামে একজনের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীকে একটি রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও রুমে ছিলেন। তাদের চোখের সামনেই ধর্ষণ করা হয়।

ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খান কোকোকে ফোন দেন। সে বন্ধু পরদিন এসে ওই তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুইদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ওই তরুণী মারা যান।

টিএইচ/এমএইচএস