কোষ্ঠকাঠিন্য এমন একটি অবস্থা যেখানে অন্ত্রের গতিবিধি শক্ত হয় এবং স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয়। কোষ্ঠকাঠিন্যের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে পেট ফুলে যাওয়া, পেটে ব্যথা, শক্ত বা স্বল্প মল, পেট পরিষ্কার না হওয়া ইত্যাদি। কোষ্ঠকাঠিন্যের কিছু কারণের মধ্যে রয়েছে স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, প্রচুর দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া, সক্রিয় না থাকা, পর্যাপ্ত পানি বা ফাইবার গ্রহণ না করা, রেচকের অত্যধিক ব্যবহার বা পাচনতন্ত্রের স্নায়ু ও পেশীর সমস্যা

বিশেষজ্ঞদের মতে, সবুজ শাক-সবজি, ফল, সালাদ, গমের ভুসি এবং বার্লির মতো উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। প্রচুর পানি পান এবং পানির সঙ্গে জোয়ান, ত্রিফলা এবং আমলকি জাতীয় ভেষজ সেবনও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আরও কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পেট পরিষ্কার রাখতে কাজ করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-


 
কমলা

নিয়মিত কমলা খেলে তা মল নরম করতে কাজ করে। কমলায় থাকা ভিটামিন সি, ফাইবার এবং নারিনজেনিন এই কাজে সাহায্য করে। এমনটাই বলছেন গবেষকরা। আপনার ব্যাগেই দুই-একটি কমলা রাখতে পারেন যা যেকোনো সময় নাস্তা হিসেবে খেতে পারবেন। কমলার জুস না খেয়ে আস্ত কমলা খেলেই বরং বেশি উপকার পাবেন।

বেরি জাতীয় ফল

বেরি ফাইবার সমৃদ্ধ। ইউএসডিএ অনুসারে, রাস্পবেরি এক কাপে ৮ গ্রাম ফাইবার সরবরাহ করে। ফাইবার মলের সিংহভাগ বৃদ্ধি করে এবং পাচনতন্ত্রের মাধ্যমে খাবারকে মসৃণভাবে চলতে সাহায্য করে। সকালের নাস্তায় ওটমিল বা এক বাটি দই দিয়ে বেরি খেতে পারেন। এটি আপনার পেটে প্রশান্তিদায়ক প্রভাব ফেলবে। তুঁত, স্ট্রবেরি, জামও এক্ষেত্রে ভালো কার্যকরী।

গমের আটা

গবেষণায় দেখা গেছে যে গমের আটা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং হজমশক্তি উন্নত করতে পারে। গমের কার্নেলের বাইরের স্তরে প্রচুর ফাইবার থাকে। গমের আটা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার রাখতে পারেন তালিকায়। এটি আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার কাজে মূখ্য ভূমিকা পালন করবে।

কলা

কলায় থাকা উচ্চ ফাইবার উপাদান কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রভাবকে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করতে পারে। এটি মল পাস করা সহজ করে বর্জ্য ভালোভাবে বাইরে ঠেলে সাহায্য করতে পারে। কলার উচ্চ ফাইবার উপাদান কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করতে কাজ করে। শরীরে পর্যাপ্ত পানি না থাকলে মল নরম হবে না বা পরিপাকতন্ত্রের মাধ্যমে মসৃণভাবে চলাচল করবে না। ডিহাইড্রেশন কোষ্ঠকাঠিন্যের সবচেয়ে সাধারণ কারণ। তাই শরীরে যাতে পানির অভাব না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখবেন।

সবুজ শাক-সবজি

সবুজ শাক-সবজি যেমন পালং শাক এবং মৌসুমি লাউয়ে ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়ামসহ অনেকগুলো পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা তরল ভারসাম্য এবং পেশী সংকোচন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। যে কারণে সবুজ শাক-সবজি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমে আসে অনেকটাই।