করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর থেকে বিশ্বের নানা প্রান্তের গবেষক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ভাইরাসটির গতিপ্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করছেন। তাদের জন্যই মানবদেহে করোনা কীভাবে সংক্রমিত হয় ও এর উপসর্গগুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছি। জ্বর, সর্দি-কাশি, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্টসহ করোনাভাইরাসের আরও অনেক উপসর্গ রয়েছে। তবে অনেকেই বলেছেন, চুল থেকে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে। তবে এ বিষয়ে কোনো গবেষণা না হলেও অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেছেন, করোনাভাইরাস চুলের কারণে ছড়ায় না। 

সম্প্রতি গবেষণা সংস্থা দ্য ল্যাঞ্চেট জানিয়েছে, করোনাভাইরাস একদিন অবধি কাপড়ে এবং চার দিন অবধি স্টেইনলেস স্টিল ও প্লাস্টিকে টিকে থাকে। এই কারণে বাইরে বের হওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বনের পরও সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েই যায়। এমনকি স্মার্টফোনের মাধ্যমেও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। অনেকে মনে করছেন, চুলের মাধ্যমেও করোনাভাইরাস ছড়ায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, চুলের মাধ্যমে করোনা ছড়ায়- এই কথা সঠিক নয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চুল থেকে সার্স ভাইরাস, ইবোলা ভাইরাস ও করোনাভাইরাসসহ অন্য কোনো ভাইরাস বা জীবাণু ছড়াতে পারে না। তবে চুলের মধ্যে এসব ভাইরাস আসার সম্ভাবনা একেবারেই কম। চুলে ভাইরাস বা জীবাণু আসার কারণে কোনো ব্যক্তি এখন অবধি অসুস্থ হননি। তাই চুল নিয়ে অকারণ উদ্বিগ্ন না হয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। 

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, চুলের মধ্যে এক ধরনের তেলের প্রলেপ থাকার কারণে এতে কোনো ধরনের জীবাণু অবস্থান করতে পারে না। এছাড়া তৈলাক্ত প্রলেপ থাকায় অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের প্রভাবে জীবাণু মরে যায়। চুল নিয়ে চিন্তিত না হয়ে নিয়মিত সাবান ও স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার, মাস্ক পরা ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা বাঞ্ছনীয়। 

চিকিৎসকরা বলেছেন, মানুষের চুল যেহেতু শরীরের অংশ নয় সে কারণে সেখান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা নেই। চুল অথবা দাড়ি থেকে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে- বিষয়টি নিয়ে এখন অবধি কোনো গবেষণা হয়নি। যদি কেউ বাড়তি সচেতনতা অবলম্বন করতে চান তাহলে ঘরে ফিরে গোসল করতে পারেন। 

তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়ানোর জন্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখাকেই সচেতনতার অংশ হিসেবে মনে করছেন। এছাড়া ঘরবন্দী জীবনযাপন করতে উদ্বুদ্ধ করছেন। 

এইচএকে/এইচএন/এএ