করোনা মহামারির কারণে আমাদের জীবন অনেক বদলে গেছে। দিনের বেশিরভাগ সময় ঘরেই কাটছে। করোনা থেকে রক্ষা পেতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। এসব সতর্কতার মধ্যে রয়েছে নিয়মিত সাবান ও স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করা, বাইরে বের হওয়ার সময় মাস্ক পরাসহ আরও অনেক বিষয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকরা বরাবরই করোনা থেকে সুরক্ষা পেতে মানুষকে সচেতন হতে বলছেন। খাদ্যাভ্যাসেও আনতে বলছেন পরিবর্তন। করোনা মোকাবেলায় যেসব জিনিস হাতের কাছে রাখা জরুরি সেসব সম্পর্কে জেনে নিন- 

স্বাস্থ্যকর খাবার

করোনার এই সময়ে ঘরে স্বাস্থ্যকর খাবার রাখা জরুরি। বিশেষ করে ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন, আইভারকটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে। স্পেনের বার্সেলোনা ইউনিভার্সিটির এক জরিপে দেখা যায়, ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খাওয়ায় করোনা সংক্রমণ ৮০ শতাংশ এবং মৃত্যু ৬০ শতাংশ কমেছে। তাই চিকিৎসকরা ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খেতে বলছেন। করোনা থেকে বাঁচার জন্য নিয়মিত শাকসবজি ও ফল জাতীয় খাবার খান। 

মাস্ক

বাইরে যাওয়ার সময় অবশ্যই মাস্ক সঙ্গে রাখতে হবে। এছাড়া ঘরে কেউ আক্রান্ত হলে উভয়কেই মাস্ক পরে থাকতে হবে। সার্জিক্যাল মাস্ক বার বার ব্যবহার করা যায় না। ঘরে ফিরে সেটি ফেলে দিতে হয়। তবে কাপড়ের তৈরি মাস্ক হলে ঘরে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো ধুয়ে ফেলা উচিত। প্রতিদিন ধোয়া সম্ভব না হলে সপ্তাহে অন্তত দুদিন মাস্ক ধোয়া উচিত। খোলা জায়গায় মাস্ক রাখা ঠিক নয়। 

হ্যান্ড স্যানিটাইজার

করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য নিয়মিত সাবান ও স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার রাখতে হবে। বাইরে বের হলে পকেটে অথবা ব্যাগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা বাঞ্ছনীয়। ঘর থেকে বের হওয়া এবং ঘরে প্রবেশের সময় স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নেওয়া জরুরি। তারপর সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। মনে রাখবেন, করোনা থেকে বাঁচার জন্য পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই। তবে স্যানিটাইজার সঙ্গে নিয়ে চুলার কাছে না যাওয়াই শ্রেয়। গবেষণায় দেখা যায়, চুলার আগুনের কাছে স্যানিটাইজার নিয়ে গেলে অসাবধানতবশত দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। শিশুর নাগালের মধ্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখবেন না। 

জীবাণুনাশক

ঘর পরিচ্ছন্ন রাখার কাজে জীবাণুনাশক ব্যবহার করা হয়। মেঝে, বারান্দা, রান্নাঘর, টয়লেট এবং শিশু ও অসুস্থ রোগীর কক্ষ সবসময় জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। করোনা থেকে বাঁচার জন্য জীবাণুনাশক দিয়ে ঘর পরিষ্কার রাখতে হবে। তবে সতর্ক অবস্থায় জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে। অসতর্ক হয়ে এটি ব্যবহার করলে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। জীবাণুনাশক সবসময় শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে।  

থার্মোমিটার

কখনো শরীরের তাপমাত্রা বেশি মনে হলে থার্মোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করুন জ্বর এসেছে কি না। কারণ করোনার অন্যতম উপসর্গ হলো জ্বর। তাই সামান্য জ্বরকেও অবহেলা করা উচিত নয়। যদি টানা তিনদিন জ্বর থাকে তাহলে করোনা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি। থার্মোমিটার ঘরের সুরক্ষিত স্থানে রাখুন। 

অক্সিমিটার

অক্সিমিটার সাধারণত পালস অক্সিমিটার নামে পরিচিত। শ্বাসকষ্ট, মাথা ব্যথা, বুকে ব্যথার সময় অক্সিমিটারের সাহায্যে হৃদস্পন্দন পরীক্ষা করা হয়। করোনা মহামারী থেকে রক্ষা পেতে ঘরে হাতের কাছে পালস অক্সিমিটার রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫ শতাংশের নিচে নামলে হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। 

এইচএকে/এইচএন/এএ