তীব্র গরমে তৃষ্ণা পেলে আমরা সাতপাঁচ ভেবেই ঠান্ডা পানি পান করি। রোজার সময়ে ইফতারে বরফ মিশ্রিত লাচ্ছি, শরবত কিংবা জুস তো থাকেই। এতে তৃষ্ণা তো মেটে, কিন্তু আপনার শরীরের কি উপকার করে? নাকি ক্ষতি ডেকে আনে? তীব্র গরমে ঠান্ডা পানি পান করা আপাতদৃষ্টিতে প্রশান্তিদায়ক মনে হলেও এটি আসলে উপকারী নয়। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে মারাত্মক ক্ষতি। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আমরা যখন অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করি তখন আমাদের দাঁতের ভেগাস নার্ভের উপর তার মারাত্মক প্রভাব পড়ে। আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো ভেগাস নামক এই স্নায়ু। যখন আমরা খুব বেশি ঠান্ডা পানি পান করি তখন এই স্নায়ু উদ্দীপিত হয়ে ওঠে। যে কারণে হৃদযন্ত্রের গতি কমে যেতে পারে অনেকটাই। ফলে হতে পারে আরও বড় কোনো ক্ষতি। তাই ঝুঁকিমুক্ত থাকতে খুব বেশি ঠান্ডা পানি পান করা থেকে বিরত থাকাই ভালো।

অনেকে শরীরচর্চা করার পর হাঁপিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি পান করে থাকেন। এ বিষয়ে কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? তাদের মতে, কোনো রকম শরীরচর্চার পরই ঠান্ডা পানি পান করা উচিত নয়। এর কারণ হলো, শরীরচর্চার পর আমাদের শরীরের তাপমাত্রা সাধারণ সময়ের চেয়ে অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই আপনি যদি এসময় ঠান্ডা পানি পান করে তখন শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে না। যে কারণে দেখা দিতে পারে হজমের নানা সমস্যা। এ ধরনের সমস্যা এড়াতে তাই শরীরচর্চার পর হালকা গরম পানি পান করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

অনেক সময় খুব বেশি ঠান্ডা পানি পান করলে তার প্রভাবে রক্তনালী সঙ্কুচিত হয়ে যেতে পারে। সঙ্গে দেখা দিতে পারে আরও অনেক সমস্যা। যেমন, খাবার হজমের মাধ্যমে আমাদের শরীর যেসব পুষ্টি উপকরণ গ্রহণ করে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এর ফলে দেখা দিতে পারে হজমের মারাত্মক সমস্যা। শরীরে সঠিকভাবে পুষ্টি না পৌঁছালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলস্বরূপ নানা রকম রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, খাবার খাওয়ার পর ঠান্ডা পানি খাওয়া মোটেই উচিত নয়। আপনার যদি এ ধরনের অভ্যাস থাকে তবে আজই বাদ দিন। কারণ খাওয়ার পরপরই ঠান্ডা পানি খেলে তা শ্বাসনালীতে শ্লেষ্মার অতিরিক্ত আস্তরণ তৈরি করে। ফলে সংক্রমণের ভয় বেড়ে যায়।

এইচএন/এএ