ধোঁয়াওঠা একথালা গরম ভাতের সঙ্গে এক টুকরো ইলিশ। ভোজনবিলাসী বাঙালির জিভে জল আনার জন্য এটুকুই যথেষ্ট। ইলিশের মৌসুম চলে এসেছে। এসময় বাজারে পাওয়া যায় ইলিশ। হোক ভাজা কিংবা ঝোল, ইলিশ খেতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ হাতে গোনা কয়েকজন। বেশিরভাগ বাঙালির রয়েছে ইলিশের প্রতি আকর্ষণ। শুধুই কি স্বাদ? নানা ধরনের গুণ কিংবা উপকারিতার জন্যও পাতে রাখতে হবে ইলিশ।

করোনা মহামারির এই সময়ে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন পাতে ইলিশ মাছ রাখার। যদিও দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশি, তবে উপকারিতা ও স্বাদের দিকে তাকিয়ে অনেকেই দাম নিয়ে মাথা ঘামান না। বর্ষাকালে সম্ভব হলে প্রতিদিন পাতে ইলিশ মাছ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, করোনাকালে সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করতে পারে ইলিশ। মহামারি ঠেকাতে ইলিশ কীভাবে কাজ করে তা জানতে চান? চলুন জেনে নেওয়া যাক-

বিশেষজ্ঞ ও পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, রূপালি মাছ ইলিশে আছে বিশেষ এক ধরনের ফ্যাটি এসিড যা পলিআনস্যাচুরেটেড নামে পরিচিত। উপকারী এই ফ্যাটি এসিড ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সারের মতো মরণঘাতি রোগকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। তাই ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে ইলিশ মাছ খান। 
 
বর্তমানে হৃদরোগ বা হার্টের সমস্যা বেশ পরিচিত। অল্প বয়সী অনেককেও এতে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। আপনি যদি নিয়মিত ইলিশ খান তবে হার্টের অসুখের ভয় কমবে। কারণ ইলিশ খেলে তা আমাদের শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল দূর করে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

আমাদের হাড় মজবুত করার জন্য ফসফরাস নামক উপাদান প্রয়োজনীয়। উপকারী এই উপাদান পর্যাপ্ত পাওয়া যাবে ইলিশ মাছ খেলে। সেইসঙ্গে ডিমেনশিয়ার মতো ভয়ঙ্কর রোগও দূরে থাকে। বুঝতেই পারছেন, সুস্থতার ক্ষেত্রে ইলিশ কতটা সহায়ক!

প্রতিদিন পাতে রাখুন ৫০-১০০ গ্রাম ইলিশ। সবচেয়ে ভালো হয় তাজা কিনে খেতে পারলে। প্রতিদিন খেতে না চাইলে সপ্তাহে অন্তত দুইদিন খান ইলিশ। প্রতি ১০০ গ্রাম ইলিশে পাবেন প্রায় ২১ দশমিক ৮ গ্রাম প্রোটিন, নায়সিন, ট্রিপ্টোফ্যান, উচ্চ পরিমাণ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন, বি ১২, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়ামসহ অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেলস।

তবে ইলিশ মাছ খাওয়ার ক্ষেত্রে কারও কারও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যদি কারও কিডনি সংক্রান্ত কোনো সমস্যা থাকে তবে ইলিশ মাছ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসক সম্মতি দিলে তবেই খাবেন, এছাড়া নয়। কোনোরকম বিধি-নিষেধ না থাকলে ইলিশ খান নিয়মিত।

এইচএন/এএ