জীবিকার প্রয়োজনে মানুষ কোনো না কোনো পেশা বেছে নেয়। কেউ ব্যবসা পছন্দ করেন, কেউ চাকরি। বর্তমান বিশ্বে কাঙ্ক্ষিত চাকরি যেন সোনার হরিণ হয়ে উঠেছে। একটি পদের বিপরীতে জমা হচ্ছে অসংখ্য আবেদনপত্র। তাদের সবাই যোগ্য কি না সেটি অবশ্য ভিন্ন বিষয়। কিন্তু চাকরি এমন দুর্লভ হয়ে ওঠার পরও মানুষ অহরহ চাকরি ছেড়ে দিচ্ছে। 

করোনা মহামারির পর অনেকের চাকরি চলে যাওয়ার পাশাপাশি অনেকে আবার নিজ থেকেই চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। অনেক কোম্পানি লকডাউনে কর্মীদের কাছ থেকে বেশি কাজ করিয়ে নেওয়াটা একটি কারণ হতে পারে। আরও বেশ কিছু কারণ রয়েছে যে কারণে কর্মীরা তাদের চাকরি ছেড়ে দিতে পারে। কারণগুলো জেনে নিন-

কর্মীর চেয়ে কোম্পানি গুরুত্বপূর্ণ

মিটিংয়ে যখন সামগ্রিক পারফরম্যান্স দেখা যায়, বেশিরভাগ নিয়োগকর্তারা জিজ্ঞাসা করেন যে কোম্পানিটি কীভাবে পারফর্ম করছে, তারা পরিসংখ্যান ইত্যাদি দেখায়। কিন্তু যখন কর্মীর মানসিক স্বাস্থ্যের কথা আসে, তখন যত্নশীল এইচআর খুব কমই খুঁজে পাওয়া যাবে। অনেক কোম্পানি শুধু রোবটের মতো খাটতে পারা কর্মী খোঁজে। চাকরি ছাড়ার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় কারণ হতে পারে।

অতিরিক্ত কাজ

অনেক নিয়োগকর্তা কর্মীর ব্যক্তিগত জীবনের কথা ভুলে যান। অনেক সময় বাড়িতেও বিভিন্ন ধরনের কাজ চাপিয়ে দেন। তারা আশা করেন যে তাদের কর্মচারীরা ২৪ ঘণ্টা উপস্থিত থাকবে। এর ফলে কর্মীদের ওপর প্রভাব পড়ে এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা হতাশ হয়ে চাকরিতে ইস্তফা দেয়।

জীবনের পুনর্মূল্যায়ন

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন সমীক্ষা এবং আলোচনা অনুসারে, কর্মীরা তাদের মূল্য বুঝতে শুরু করেছে। তাদের কাছে কাজের অর্থ কী এবং কাজের দৃশ্যের বাইরে জীবন কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা নিয়ে তারা পুনর্বিবেচনা শুরু করেছে। তাদের সময় কীভাবে ব্যয় করা উচিত তা মূল্যায়ন করছে, একটি চাকরি নিশ্চয়ই জীবনের চেয়ে বেশি কিছু নয়।

অগ্রাধিকার

অনেকেই বুঝতে পেরেছে যে কাজের চেয়ে পরিবারকেই তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তারা কাজ থেকে বাড়ি ফিরে সেই সাধারণ এক বা দুই ঘণ্টা প্রিয়জনের সান্নিধ্যে থাকার পর বুঝতে পারে যে চাকরির কারণে কী অমূল্য জিনিস তারা হারিয়ে ফেলছে।

শখকে প্রাধান্য

আমরা অনেকেই এমন কাজ করি যা আমরা পছন্দ করি না তবু শুধুমাত্র বেতন ভালো বলে করে থাকি। কিন্তু এই মহামারী চলাকালীন অনেকে বুঝতে পেরেছে যে অপছন্দের চাকরির পরিবর্তে শখের কাজটি রুটি-রুজির উত্স হয়ে উঠলে সেটিই হবে বেশি সুখের কারণ। তাই তারা জব ছেড়ে নিজের শখকে প্রাধান্য দিচ্ছে।