ভুলে যাওয়ার রোগ খুব বেশি মারাত্মক নয়, যতক্ষণ তা ছোটখাটো বিষয়গুলো ভুলে যাওয়া পর্যন্ত থাকে। কিন্তু আপনি যদি বড় বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় ভুলে যান, তবে তা অবশ্যই দুশ্চিন্তার কারণ। আর এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভুলে যাওয়ার শুরুটা কিন্তু ছোট ছোট বিষয় ভুলে যাওয়া থেকেই শুরু হয়।

আপনি হয়তো চুলের ক্লিপ খুঁজে পাচ্ছেন না বা বাড়ির চাবির গোছা কোথায় রেখেছেন তা মনে করতে পারছেন না। এমন ছোট ছোট ভুলে যাওয়া থেকেই হয় সমস্যার শুরু। এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে সতর্ক হোন। শুরুতেই সমাধান করলে পরবর্তীতে আর ভুগতে হবে না। 

বয়স বাড়তে থাকলে ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে অনেকের ক্ষেত্রেই। এটি এমন এক সমস্যা, যাকে শুরুতে কেউ পাত্তা দিতে চায় না। কিন্তু ধীরে ধীরে তা অ্যালঝাইমার্স, ডিমেনশিয়ার মতো রোগের দিকে নিয়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরের পাশাপাশি যত্ন নিতে হবে মনেরও। আপনার মন যদি সুস্থ থাকে তবে যেকোনো কাজই সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন। আপনার মস্তিস্ক যদি সুস্থ না থাকে তবে পুরো শরীরেই তার প্রভাব পড়বে। কিছু খাবার আপনাকে ভুলে যাওয়ার রোগ থেকে বাঁচাতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

কুমড়ো বীজ

কুমড়োর তৈরি নানা পদ খেতে আমরা অভ্যস্ত। আর বেশিরভাগ সময়েই এর বীজ ফেলে দেই। কিন্তু আপনি জানেন কি, কুমড়োর বীজও দারুণ উপকারী? বিশেষ করে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এটি বেশ কার্যকরী। তাই আপনি যদি ভুলে যাওয়ার রোগ থেকে দূরে থাকতে চান তবে নিয়মিত কুমড়োর বীজ খাবেন। এটি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এতে থাকা দস্তা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কাজ করে। সেইসঙ্গে উন্নত করে চিন্তা করার ক্ষমতাকেও। শিশুদেরও নিয়মিত কুমড়োর বীজ খেতে দেবেন।

ডার্ক চকোলেট

আপনি যদি চকোলেটপ্রেমী হয়ে থাকেন, তবে তো কথাই নেই! অবশ্য চকোলেট খেতে ভালোবাসে না, এমন মানুষ খুব কমই আছে। খেতে ভালো এবং একইসঙ্গে উপকারী, এমন খাবারের তালিকা খুব বড় নয়। আর সেই তালিকায় শুরুর দিকেই আছে চকোলেটের নাম। বিশেষজ্ঞদের মতে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে চকোলেট। এতে থাকে খনিজ ও দ্রবণীয় ফাইবার। চকোলেটে থাকা ওলেইক অ্যাসিড, স্টেরিক অ্যাসিড, প্যালমেটিক অ্যাসিড আপনার ভুলে যাওয়ার সমস্যাকে প্রতিরোধ করতে পারে। চকোলেট খাওয়ার সময় খেয়াল রাখবেন, তাতে যেন অন্তত ৬৫ শতাংশ চকোলেট থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

বাদাম

বাদাম খেতে কে না ভালোবাসেন! গল্প, আড্ডা, সময় কাটানোর ক্ষেত্রে বাদামের জুড়ি নেই! এই বাদাম কিন্তু আপনাকে রক্ষা করতে পারে ভুলে যাওয়ার রোগ থেকেও। তাই প্রতিদিন ১১-১২টি বাদাম খান। নাস্তার বিকল্প হিসেবেও খেতে পারেন বাদাম। এটি দুধের সঙ্গে মিশিয়েও খেতে পারবেন। এতে ভালো থাকবে আপনার মনে রাখার ক্ষমতা।

ব্রোকলি

ফুলকপির মতো দেখতে সবুজ রঙের এই সবজির নাম ব্রোকলি। এটি ভিনদেশি সবজি হলেও আমাদের দেশে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই এই সবজিতে আছে ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফ্ল্যাভোনয়েডস, ভিটামিন-ই, আয়রন জাতীয় পুষ্টি। এসব পুষ্টি মস্তিষ্কের গতি এবং এর দক্ষতা বাড়াতে কাজ করে। তাই ভুলে যাওয়ার রোগ থেকে বাঁচতে চাইলে নিয়মিত ব্রোকলি রাখুন পাতে। 

আখরোট

মস্তিষ্ক ভালো রাখার ক্ষেত্রে আরেকটি কার্যকরী খাবার হলো আখরোট। এটি ভীষণ পুষ্টিকর। মস্তিষ্কের উন্নতি করে ভুলে যাওয়ার রোগ দূর করে এই শুকনো ফল। এতে থাকা ভিটামিন ই, তামা, ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি মস্তিষ্কের শক্তি বাড়াতে কাজ করে।