এবারের বইমেলায় নতুন ভ্রমণগ্রন্থ ‘সুন্দরবনের বাঁকে বাঁকে এনেছেন জাকারিয়া মন্ডল। বইটি প্রকাশ করেছে অঙ্কুর প্রকাশনী। প্রচ্ছদ এঁকেছেন মোস্তাফিজ কারিগর। 

প্রাসঙ্গিক রঙিন আলোকচিত্র গ্রন্থটিকে সমৃদ্ধ করেছে। করোনাকালীন বইমেলায় পাঠক সমাগম কম থাকলেও জাকারিয়া মন্ডল তার নতুন বই নিয়ে খুবই আশাবাদী। 

সুন্দরবনের বাঁকে বাঁকে গ্রন্থে সুন্দরবন সম্পর্কিত সবকিছুরই সুচারু সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। চোখে দেখা বিষয়ের সঙ্গে বিভিন্ন আকার গ্রন্থের প্রাসঙ্গিক রেফারেন্সে গ্রন্থটি সমৃদ্ধ। তবে ভ্রমণ গল্পের আদলে হওয়ায় কঠিন বিষয়কেও সহজ মনে হয়। পাঠ এগিয়ে চলে সাবলীলভাবে। লেখকের সঙ্গে সুন্দরবন ভ্রমণ হয়ে যায় পাঠকেরও।

জাকারিয়া মন্ডলের আগের তিনটি গ্রন্থের নাম ‘পাহাড়ের ভাঁজে মহাকাব্য’, ‘বাড়ির পাশে তীর্থ’ ও ‘নদী অঞ্চলের ইতিবৃত্ত’। তার জন্ম দিনাজপুরের বিরামপুরে। তিনি বিরামপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক, নটরডেম কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগে স্নাতকোত্তর করেছেন। নিউজ মিডিয়া, গবেষণা ও তথ্যচিত্র তার কর্মক্ষেত্র। পেশাগত দায়িত্ব ছাড়াও প্রায়ই পরিব্রাজক বেশে পথে নামেন। চষে বেড়ান দেশ, বিদেশ। কিংবদন্তি, ইতিহাস, সংস্কৃতি, সভ্যতার সুতোয় গাঁথেন ভ্রমণের গল্প। 

বইটির ফ্ল্যাপে বলা হয়েছে, সুন্দরবনে সরেজমিন। বিভিন্ন সময়ে। বিভিন্ন ঋতুতে। চেনা-অচেনা নদী থেকে নদী, বিপদসঙ্কুল খাল থেকে খালে ভাসা। সৈকত মাড়িয়ে বুনো ট্রেইলে ঢুকে পড়া গভীর বনে। পরিবেশ, প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়া। বুঝে নেওয়া বন ও বুনোদের মতিগতি। কখনো বানরের সঙ্গে বাঁদরামি, কখনো হরিণের সঙ্গে সখ্য। কখনোবা কুমিরের পিছু ধাওয়া, বাঘের ভয়ে পিছু হটা।

দুবলার চরে জেলে জীবনের রোমাঞ্চকর গল্প। রাশ উৎসবের অজানা কাহিনী। কমলে কামিনী দেবির আখ্যান। জোয়ার-ভাটার গান। সুন্দরী বনের অদ্ভূত সব লোকজ সংস্কৃতির অনুসন্ধান। মানুষেরই দেবী ও দেবতা হয়ে ওঠার গল্প। বনবিবির বট, মন্দিরের খোঁজ। গাজী-কালু উপাখ্যান। চম্পাবতীর সমাধি। বাঘদেবতা দক্ষিণ রায়ের গল্প। মানিক পীরের দরগা। 

বাদা বনের আহত পরিবার, বাঘ বিধবাদের করুণ কাহিনী। হারিয়ে হাওয়া বসতি ও সমৃদ্ধ সভ্যতার সুলুক সন্ধান। চাপা পড়ে থাকা ইতিহাসের ধুলো ঝেড়ে গৌরবময় ঐতিহ্যের আখ্যান যোগ।

এমএএস