বাংলা ভাষা-মুক্তিযুদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক চেতনার অগ্রদূত কবি শামসুর রাহমানের ৯৩তম জন্মদিন আজ। ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন বাংলা ভাষার জনপ্রিয় এই কবি। ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।

কবি শামসুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে আগামীকাল রোববার (২৪ অক্টোবর) একক বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি। একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া একক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট গবেষক ও কবি অধ্যাপক খালেদ হোসাইন, একাডেমির সচিব এ এইচ এম লোকমান, একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

কবি শামসুর রাহমানের মায়ের নাম আমেনা খাতুন, পিতা মুখলেসুর রহমান চৌধুরী। তার পৈতৃক বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার পাড়াতলী গ্রামে। তিনি পড়াশোনা শুরু করেন রাজধানীর পোগোজ স্কুল দিয়ে। সেখানেই কেটেছে তার শৈবব-কৈশর এবং সারাজীবন। শৈশবেই কবিতায় হাতেখড়ি হয় তার।

১৯৫৭ সালে দৈনিক মর্নিং নিউজে সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন শামসুর রাহমান। ১৯৫৭-১৯৫৯ রেডিও পাকিস্তানের তিনি প্রোগ্রাম প্রডিউসার ছিলেন। ১৯৬০-১৯৬৪ দৈনিক মর্নিং নিউজে সিনিয়র সাব-এডিটর, ১৯৬৪-১৯৭৭ দৈনিক পাকিস্তান ও দৈনিক বাংলায় সহকারী সম্পাদক এবং ১৯৭৭-১৯৮৭ দৈনিক বাংলার ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

‘নিজ বাসভূমে’, ‘বন্দী শিবির থেকে’, ‘দুঃসময়ে মুখোমুখি’, ‘ফিরিয়ে নাও ঘাতক কাঁটা’, ‘বাংলাদেশ স্বপ্ন দ্যাখে’, ‘ইকারুসের আকাশ’, ‘উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’, ‘যে অন্ধ সুন্দরী কাঁদে’, ‘অস্ত্রে আমার বিশ্বাস নেই’, ‘দেশদ্রোহী হতে ইচ্ছে করে’, ‘বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়’, ‘ভস্মস্তূপে গোলাপের হাসি’ প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থের শিরোনামেই দেশ প্রেমের কবিতা লিখেছেন শামসুর রাহমান।

বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য কবি শামসুর রাহমান স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক, আদমজী পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জীবনানন্দ পুরস্কারসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হন। সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য তিনি জাপানের মিৎসুবিশি পুরস্কার পান।

১৯৯৪ সালে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা তাকে আনন্দ পুরস্কারে ভূষিত করে। ওই বছর তাকে সম্মানসূচক ডি-লিট উপাধি দেয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯৬ সালে সম্মানসূচক ডি-লিট উপাধি দেয় কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।

এএইচআর/এমএইচএস