সাহিত্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ৩০০ প্রতিযোগীর মধ্যে ২০ জন তরুণ লেখককে পুরস্কৃত করেছে পেন বাংলাদেশ।

গল্পের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন মনিরা মিতু, আরাফাত শাহীন, নবনীতা প্রামাণিক, আবদুল্লাহ্ আল মাসুম, মৌপিয়া তাজরিন, ওয়াহিদ মোস্তফা, যাহিদ সুবহান, রোমেল রহমান, সুলতান মাহমুদ ও মুহাম্মদ মাসুদ। 

কবিতার জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন- রনি বর্মণ, ইনজামুল হক, শুভ্র সাকীফ, অনুভব আহমেদ, জসিম উদ্দিন বিজয়, তামান্না পারভেজ, রফিকুজ্জামান রণি, জেলি খাতুন ও অহ নওরোজ। 

কারাবন্দি লেখক দিবস উপলক্ষে শনিবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস (ইউল্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পেন বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে অনূর্ধ্ব-৩৫ সাহিত্য প্রতিযোগিতা-২০২০-এর আয়োজন করা হয়।  

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গল্প লেখার শুরু নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, আমি কখনও ভাবিনি লেখক হব। শিক্ষক ও মা-বাবার সহযোগিতায় আমি সাহিত্যিক হয়েছি। আমি সাহিত্যিক হব তা ভেবে কখনও গল্প লিখিনি। পড়াশোনা জীবনে সিলেট এমসি কলেজে চাকরি পাই। তবে সে চাকরি বাদ দেই। তারপর বাংলা একাডেমিতে চাকরির জন্য গেলাম এবং লেখালেখির অভ্যাস থাকায় সেখানে চাকরি হলো। এভাবে সাহিত্য আমার দিগন্তকে প্রসারিত করতে থাকে।

পেন বাংলাদেশ-এর প্রতিযোগিতা সম্পর্কে তিনি বলেন, সাতচল্লিশ পরবর্তী সময়ে বাংলা সাহিত্যের যে স্রোত রয়েছে, আমরা সেখানে নিজেরা একটি স্রোত তৈরি করতে পেরেছিলাম, এই প্রতিযোগিতায় যারা অংশ নিয়েছেন আশা করি সে স্রোতকে আপনারা প্রসারিত করবেন। রাজনৈতিক সব প্রেক্ষাপটকে ঘিরে আমাদের তরুণ লেখকেরা অতীতে সাহিত্য রচনা করেছেন। আমরা চাই, এখনকার প্রজন্ম সেই সাহিত্যকে বিদেশি পাঠকের কাছে পৌঁছে দেবে। যারা পেন বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছেন এবং আমাদের যে লেখক রয়েছেন তাদের সবাইকে নিয়ে আমাদের চলতে হবে।

বরেণ্য এই লেখক আরও বলেন, আমি সরকারকে বলি আমাদের জন্য একটি অনুবাদ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠান করুন। আমাদের সাহিত্যের স্রোতকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু এ বিষয়ে বলেছিলেন কিন্তু পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে সেই ধারা ভেসে গেছে। কেউ আর তা ধারণ করেনি। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর হয়েছে, আরও পঞ্চাশ বছর পর আমরা থাকব না কিন্তু আমাদের সাহিত্য থাকবে। তাই সাহিত্যের পথে আমরা আমাদের নবীনদের পৌঁছে দিতে চাই।

কথাসাহিত্যিক পারভেজ হোসেন বলেন, শুধু লেখক কেন, সবারই কথা বলার স্বাধীনতা থাকা উচিত। ক্ষমতা আজীবন গলা টিপে ধরেছে, আগামীতেও ধরবে। তবু এরমধ্যে বলার চেষ্টার মানসিকতা রাখা জরুরি। সে কাজটাই প্রতিবছর আমাদের পেন বাংলাদেশ মনে করিয়ে দেয়। বিশ্বে এমন অনেক লেখক এখনও কারাবন্দি, আমরা তাদের মুক্তি চাই।  

পেন বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক কথাসাহিত্যিক মুহাম্মদ মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় এবং সহ-সভাপতি কবি শামীম রেজার সভাপতিত্বে এসময় আরও অভিব্যক্তি তুলে ধরেন গৌরাঙ্গ মহার্ঘ, আসাদ মান্নান, জাহিদ সোহাগ প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, পেন বাংলাদেশ পেন ইন্টারন্যাশনালের ১৪৮টি কেন্দ্রের একটি। এটি বাংলাদেশের কবি, সাহিত্যিক, প্রকাশক, সম্পাদক, অনুবাদক, সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদদের একটি দ্বিভাষিক সংগঠন, যা বাংলাদেশে সাহিত্যের প্রচার-প্রসার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার্থে কাজ করে। 

পিএসডি/এইচকে