মিট দ্য এডিটর : ঢাকা পোস্টের সারাদেশের সংবাদকর্মীদের মিলনমেলা
ঢাকা পোস্টের সারাদেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে রাজধানীর বনানীর গোল্ডেন টিউলিপ হোটেলে অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী বিশেষ আয়োজন ‘মিট দ্য এডিটর’।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই সম্মেলন পরিণত হয় এক প্রাণবন্ত মিলনমেলায়। সারাদেশ থেকে আসা প্রতিনিধি সাংবাদিকরা যেমন তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন, তেমনি সম্পাদকীয় টিমও তুলে ধরেন সংবাদপত্রের ভিশন ও ডিজিটাল যুগের চ্যালেঞ্জ।
বিজ্ঞাপন
দিনব্যাপী এই আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা পোস্টের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঢাকা পোস্ট শুরু থেকেই চেষ্টা করেছে সংবাদকে দ্রুততম সময়ে পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে। আপনাদের মতো পরিশ্রমী প্রতিনিধিদের কারণেই আজ আমাদের এই যাত্রা এতদূর এসেছে। ভবিষ্যতের পথচলায়ও আপনাদের সক্রিয় ভূমিকা আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।
বিজ্ঞাপন
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেইলের নির্বাহী সম্পাদক হারুন জামিল। তিনি প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, মাঠের সাংবাদিকদের অবদানই একটি গণমাধ্যমকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করায়। ঢাকা পোস্ট এই আয়োজনের মাধ্যমে যেভাবে প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।
প্রধান বার্তা সম্পাদক আবু রাসেল বলেন, ঢাকা পোস্টের প্রত্যেক প্রতিনিধি আমাদের পরিবারের অংশ। সংবাদে নিরপেক্ষতা, দ্রুততা ও পাঠকের আস্থা অর্জন— এই তিনটি বিষয় আপনাদের কাজের মধ্যদিয়ে বাস্তবায়িত হয়। আমরা চাই, ভবিষ্যতেও আপনারা আরও নির্ভুল ও অনুসন্ধানী সংবাদ তুলে ধরবেন।
ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ বার্তা সম্পাদক মাহাবুর আলম সোহাগ বলেন, সংবাদ সংগ্রহ শুধু তথ্য আনার কাজ নয়, বরং তা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করতে হয়। প্রতিনিধিদের সংবাদ আমাদের মূল চালিকাশক্তি। মাঠপর্যায়ের চোখ-কান হয়ে আপনারা যত বেশি নির্ভুল তথ্য আনবেন, আমরা ততই শক্তিশালী হবো।
হেড অব নিউ মিডিয়া ইনিশিয়েটিভ আরিফুল ইসলাম আরমান বলেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংবাদকে আরও আকর্ষণীয়ভাবে পরিবেশনের কৌশল এখন অপরিহার্য। শুধু নিউজ পাঠানো নয়, সেটি কীভাবে ভিডিও, গ্রাফিক্স ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হবে, সেদিকেও আপনাদের নজর দিতে হবে। আমরা একসঙ্গে কাজ করলে এই পরিবর্তন সম্ভব।
অতিরিক্ত বার্তা সম্পাদক মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ বলেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের জন্য এখন সংবাদ তৈরি করতে হয় ভিন্ন আঙ্গিকে। শুধু তথ্য দিলেই চলবে না, পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখতে হবে উপস্থাপনের দক্ষতা দিয়ে।
যুগ্ম বার্তা সম্পাদক নাঈম ফেরদৌস রিতম, জনি সাহা, শামীম হোসেন ও সাইফুজ্জামান সুমন চারজনই মাঠপর্যায়ের সংবাদকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আপনাদের শ্রমই ঢাকার বাইরে থেকেও পাঠকের কাছে স্থানীয় খবর পৌঁছে দিচ্ছে। আমাদের সংবাদ-চক্রে প্রতিনিধিদের অবদান অনন্য।
সহকারী বার্তা সম্পাদক রুহুল আমিন রয়েল বলেন, প্রতিটি খবরের ভেতরে থাকে একজন প্রতিনিধির পরিশ্রম। তাই সংবাদ প্রকাশের সময় আমরা সেই শ্রমের মূল্যায়ন করি।
হেড অব মাল্টিমিডিয়া সাইফুল ইসলাম বলেন, ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট এখন পাঠকের প্রথম পছন্দ। ভিডিও, পডকাস্ট, ইনফোগ্রাফিক— এসবই আমাদের নতুন যুগের সাংবাদিকতার অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতিনিধিদেরও এই ধারা শেখা ও অনুশীলন করা জরুরি।
হেড অব ভিডিও প্রোডাকশন মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভবিষ্যতের সাংবাদিকতায় ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট হবে প্রধান হাতিয়ার। মাঠপর্যায়ে কাজ করার সময়ই ভিডিও উপাদান সংগ্রহ করলে সংবাদ হবে বহুমাত্রিক।
হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড মার্কেটিং এইচ এম গোলাম মর্তুজা বলেন, সংবাদ যত বেশি পাঠকের কাছে পৌঁছাবে, বিজ্ঞাপনসহ সামগ্রিক ব্যবসায়িক সম্ভাবনাও তত বাড়বে। এজন্য প্রতিনিধিদের কন্টেন্টের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে।
রংপুরের নিজস্ব প্রতিবেদক ফরহাদুজ্জামান ফারুক বলেন, আমরা মাঠে গিয়ে কাজ করি, কখনো ঝুঁকি নেই, কখনো প্রতিকূলতায় পড়ি। কিন্তু সম্পাদকীয় টিম আমাদের পাশে থাকায় আত্মবিশ্বাস পাই। আজকের এই মিলনমেলা আমাদের আরও শক্তি জুগিয়েছে।
ঢাকা পোস্টের উপপ্রধান প্রতিবেদক শফিকুল ইসলাম বলেন, রিপোর্টারদের সাহসী পদক্ষেপই আমাদের সংবাদকে বিশেষ করে তোলে। আমরা চাই মাঠপর্যায়ের খবরগুলোকে জাতীয় গুরুত্ব দিয়ে পাঠকের কাছে পৌঁছাতে। আপনাদের প্রতিটি খবরই আমাদের মূলধন।
বিশেষ প্রতিনিধি এফ এম আবদুর রহমান মাসুম ও মেহেদী হাসান ডালিম মাঠের কাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে বলেন, প্রতিনিধিরাই আসলে সংবাদ সংগ্রহের আসল যোদ্ধা। আপনাদের অভিজ্ঞতাই আমাদের শেখার জায়গা।
চিফ অব ক্রাইম অ্যান্ড আরবান অ্যাফেয়ার্স জসীম উদ্দীন বলেন, শহর কিংবা গ্রাম— সব জায়গার অপরাধ সংক্রান্ত সংবাদ পাঠকের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। মাঠে আপনাদের নজরদারিই আমাদের সবচেয়ে বড় ভরসা।
চিফ অব পলিটিক্যাল অ্যান্ড স্টেট অ্যাফেয়ার্স আদিত্য রিমন বলেন, রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় বিষয় নিয়ে কাজ করার সময় প্রতিনিধিদের ভূমিকা অপরিসীম। অনেক তথ্য সরাসরি আপনাদের কাছ থেকে আমরা পাই।
ক্রীড়া সম্পাদক ফখরুল ইসলাম বলেন, ক্রীড়া সংবাদকে আরেকটু মানবিকভাবে উপস্থাপন করা জরুরি। স্থানীয় খেলোয়াড় ও টুর্নামেন্টের খবরও জাতীয় পাঠকের কাছে তোলার দায়িত্ব আপনাদের।
জ্যেষ্ঠ ক্রীড়া প্রতিবেদক আরাফাত জোবায়ের বলেন, আজকের তরুণ পাঠক ক্রীড়াকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখে। তাই মাঠপর্যায়ের খেলার খবর আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে নতুনভাবে উপস্থাপিত হওয়া দরকার।
অ্যাডমিন অ্যান্ড এইচআর বিভাগের ম্যানেজার তানভীর কবির ও অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফাইন্যান্স বিভাগের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ সুজন রেজা বলেন, একটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে শুধু সংবাদ নয়, প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনাও সমান জরুরি। প্রতিনিধিদের কাজই আমাদের সবকিছুর মূল ভিত্তি।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রতিটি সেশন উপস্থাপনা করেন সম্পাদকীয় ও গবেষণা বিভাগের প্রধান বিনয় দত্ত ও সহ-সম্পাদক রাবেয়া মেমি। প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় তারা অনুষ্ঠানে আলাদা মাত্রা যোগ করেন। বিনয় দত্ত বলেন, সংবাদ শুধু লেখা নয়, এর পরিবেশনও গুরুত্বপূর্ণ। আজকের আয়োজন সেটাই প্রমাণ করেছে।
রাবেয়া মেমী বলেন, প্রতিনিধিদের এত উৎসাহ ও প্রাণশক্তি দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি। সাংবাদিকতার প্রতি আপনাদের ভালোবাসাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানের শেষ ভাগে অনুষ্ঠিত হয় র্যাফেল ড্র, যেখানে প্রতিনিধিদের বিভিন্ন রুটের বিমানের টিকিট পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়।
এমজে