ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
অজ্ঞাতপরিচয় প্রায় ৪০০ জনকে আসামি করে এই মামলা দায়ের করা হয়।
বিজ্ঞাপন
সোমবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার ইবনে মিজান।
তিনি বলেন, সোমবার ডেইলি স্টারের অপারেশন শাখার প্রধান মিজানুর রহমান তেজগাঁও থানায় অজ্ঞাত পরিচয় সাড়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। এতে অন্তত ৪০ কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
মামলায় বাদী উল্লেখ করেছেন, গত ১৯ ডিসেম্বর রাত ১২টা ২৫ মিনিটে প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা ও দাহ্য পদার্থসহ মিছিল নিয়ে ডেইলি স্টার কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়। তারা পত্রিকাটির বিরুদ্ধে উত্তেজনাকর স্লোগান দিতে থাকে এবং জনরোষ সৃষ্টি ও দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা চালায়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ঘটনার আগে কয়েকজন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে হামলার নির্দেশনা দেয়। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী ভবনের স্টিল গেট ও কাচের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে।
হামলাকারীরা কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থানরত সাংবাদিক ও কর্মীদের মারধরের চেষ্টা করে এবং আসবাবপত্র, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ও বিভিন্ন সরঞ্জাম ধ্বংস করে। ভবনের নিচতলা, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। এছাড়া চতুর্থ থেকে অষ্টম তলা পর্যন্ত ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
এ সময় ডেইলি স্টারের বিভিন্ন ফ্লরের দুই শতাধিক কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ক্যামেরা, সার্ভার, প্রিন্টার, স্টুডিও ইকুইপমেন্টসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস লুট ও ধ্বংস করা হয়। হামলার সময় সাক্ষ্য প্রমাণ নষ্ট করতে একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা ও ডিভিআর ভেঙে ফেলা হয়।
এ সময় ঘটনাস্থলে আসা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের কাজে বাধা দেয় এবং হুমকি দেওয়া হয়।
মামলার বাদী মিজানুর রহমান আরও উল্লেখ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়লে ভোর আনুমানিক সাড়ে চারটার দিকে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ উদ্যোগে ভবনের ভেতর থেকে ৩০ জন সাংবাদিক ও কর্মচারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় ডেইলি স্টারের প্রকাশনা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। ফলে গত শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) পত্রিকাটি প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি এবং অনলাইন কার্যক্রম প্রায় ১৭ ঘণ্টা বন্ধ ছিল।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাশৈণ্যু মারমা মামলাটি গ্রহণ করেছেন। মামলায় ১৮৬০ দণ্ডবিধি ১৮৬০, বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪, সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ এবং সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫- ধারা উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে এই হামলার ঘটনায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এসএএ/বিআরইউ