ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে হামলার শিকার বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিককে রোমানিয়ায় নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। সঙ্গে নিহত নাবিকের মরদেহও নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।

শুক্রবার (৪ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মু‌খোমু‌খি হ‌য়ে এসব তথ্য জানান মাসুদ বিন মোমেন।

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়া বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের ২৮ নাবিককে উদ্ধারের পর মলদোভা হয়ে রোমানিয়াতে নেওয়া হচ্ছে। তাদের সঙ্গে হাদিসুর রহমানের মরদেহও রয়েছে।

রোমানিয়া থেকে তাদের দেশে ফেরানো হবে বলেও জানান তিনি। মাসুদ বিন মো‌মেন বলেন, বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’র ওপর কারা হামলা করেছে, সে বিষয়ে আমরা এখনও নিশ্চিত নই। তবে ঘটনাটি তদন্ত করে জানানোর আশ্বাস দিয়েছে রাশিয়া।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে রকেট হামলার কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র জীবিত ২৮ নাবিককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। তাদের সঙ্গে নিহত নাবিক হাদিসুর রহমানের লাশও রয়েছে। নাবিকদের জাহাজ থেকে নামিয়ে টাগ বোটে করে জেটিতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ইউক্রেনের একটি বাংকারে নেওয়া হয়। সুবিধাজনক সময়ে পোল্যান্ড সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর তাদের দেশে পাঠানো হবে।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে হামলা করেছে রাশিয়া। যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে আটকে পড়ে বাংলার সমৃদ্ধি। বুধবার (২ মার্চ) রাত ৯টা ২৫ মিনিটে রকেটটি রুশ হামলার শিকার হয়। এতে হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান (৩৩) নিহত হন। তিনি বরগুনার বেতাগী উপজেলার ৩ নম্বর হোসনাবাদ ইউনিয়নের আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের ছেলে। ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর চ্যানেলে নোঙর করা জাহাজটিতে ২৯ জন বাংলাদেশি নাবিক ছিলেন।

বিএসসি সূত্রে জানা গেছে, সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরপরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেয় শিপিং কর্পোরেশন। শেষ মুহূর্তে পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজ। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অলভিয়া বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

এনআই/এসএসএইচ