ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে হামলার শিকার বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিককে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নাবিকরা ইউক্রেনের বাংকার থেকে পার্শ্ববর্তী দেশে যাত্রা শুরু করেছেন।  

শনিবার (৫ মার্চ) দুপুরে তারা ইউক্রেন থেকে যাত্রা শুরু করেছেন বলে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন, ইউক্রেন থেকে নাবিকরা তিন ঘণ্টা আগে নিরাপদ দেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন। পার্শ্ববর্তী তিন দেশ রুমানিয়া, পোল্যান্ড ও মলদোভার যেকোনো একটি দেশে যাবেন তারা। যে দেশে যাওয়ার রাস্তা নিরাপদ সেখানেই নিয়ে যাওয়া হবে তাদের। কোন দেশে যাচ্ছে, কোথায় আছেন তা নিরাপত্তার কারণে প্রকাশ করছি না। নিরাপদ স্থানে পৌঁছানোর পর জানানো হবে।

শুক্রবার (৪ মার্চ) মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হ‌য়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছিলেন, নাবিকদের রোমানিয়ায় নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। 

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়া বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের ২৮ নাবিককে উদ্ধারের পর মলদোভা হয়ে রোমানিয়াতে নেওয়া হচ্ছে। তাদের সঙ্গে হাদিসুর রহমানের মরদেহও রয়েছে।

রোমানিয়া থেকে তাদের দেশে ফেরানো হবে জানিয়ে মাসুদ বিন মো‌মেন বলেন, বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধির ওপর কারা হামলা করেছে, সে বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত নই। তবে ঘটনাটি তদন্ত করে জানানোর আশ্বাস দিয়েছে রাশিয়া।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে রকেট হামলার কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধির জীবিত ২৮ নাবিককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। তাদের সঙ্গে নিহত নাবিক হাদিসুর রহমানের লাশও রয়েছে। নাবিকদের জাহাজ থেকে নামিয়ে টাগ বোটে করে জেটিতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ইউক্রেনের একটি বাংকারে নেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে আটকে পড়ে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজ। বুধবার (২ মার্চ) রাত ৯টা ২৫ মিনিটে রুশ হামলার শিকার হয় এটি। এতে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান (৩৩) নিহত হন। তিনি বরগুনার বেতাগী উপজেলার ৩ নম্বর হোসনাবাদ ইউনিয়নের আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের ছেলে।

জানা গেছে, সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরপরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেয় শিপিং কর্পোরেশন। শেষ মুহূর্তে পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজ। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অলভিয়া বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

কেএম/ওএফ