রোহিঙ্গাদের ভোটার বানাত বয়ান
চট্টগ্রামে জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির মামলায় মো. বয়ান উদ্দিন নামে একজনকে কক্সবাজার জেলার মহেশখালি থানার মাতারবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। গ্রেপ্তার হওয়া বয়ান নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী ডেটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন।
শুক্রবার ভোরে (৪ মার্চ) তাকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামে আনা হয় বলে শনিবার (৫ মার্চ) ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন কাউন্টার টেররিজম ইউনিট চট্টগ্রামের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ফারুক উল হক। তিনি বলেন, এর আগে এনআইডি জালিয়াতি মামলায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের জবানবন্দিতে বয়ানের নাম এসেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, এনআইডি জালিয়াতি মামলায় বয়ানসহ সর্বমোট ১৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মো. বয়ান উদ্দিন এনআইডি জালিয়াতির ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামি। এনআইডি জালিয়াতি মামলায় গ্রেপ্তার ৬ আসামি এরইমধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এর মধ্যে আসামি মোস্তফা ফারুক তার জবানবন্দিতে বলেছেন, এনআইডি জালিয়াতি মামলার প্রধান আসামি জয়নাল আবেদিনের সহযোগী হিসেবে কাজ করত মো. বয়ান উদ্দিন। এছাড়া এর আগে গ্রেপ্তার আসামি জাফর, আবসার উল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদেও মামলার ঘটনায় বয়ান উদ্দিনের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে।
বিজ্ঞাপন
কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার বয়ান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় জড়িত থাকার সত্যতা স্বীকার করেছে। ২০১৭ সালে বয়ানের সঙ্গে আসামি জয়নাল আবেদিনের পরিচয় হয়। ২০১৭ সালে জয়নাল আবেদিনের সহায়তায় নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে অস্থায়ী ভিত্তিতে ডাটা এন্ট্রি অফিসার হিসেবে নিয়োগ পায় বয়ান। সে নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম-২০১৭ ও স্মার্ট কার্ড বিতরণ কার্যক্রম-২০১৮ তে চট্টগ্রাম জেলার আওতাধীন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বন্দর, পাহাড়তলি, পাঁচলাইশ থানা, রাউজান ও সাতকানিয়া উপজেলায় ডাটা এন্ট্রি অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিল।
জানা গেছে, গ্রেপ্তার জয়নাল আবেদিনের আন্দরকিল্লা সাবেরিয়া বাসায় থাকত ও নির্বাচন কমিশন অফিসে যাওয়া আসা করত বয়ান। এক পর্যায়ে আসামি জয়নাল আবেদিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে উঠে সে। গ্রেপ্তার নজিবুল্লাহ ও আবসার উল্লাহসহ বিভিন্ন রোহিঙ্গা দালালের মাধ্যমে জয়নালের কাছে আসা রোহিঙ্গাদের ভোটার করতেন বয়ান। রোহিঙ্গাদের ডাটা এন্ট্রি, ছবি তুলে, আঙুলের ছাপ নিয়ে ভোটার আইডির ডাটা ক্রিয়েট করত বয়ান। আর এজন্য জয়নাল প্রতি সপ্তাহে ২০ হাজার টাকা দিতে বয়ানকে। মামলা দায়েরের পর থেকে পালিয়ে ছিল বয়ান।
কেএম/জেডএস