মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসি’র কাছে ৮ সপ্তাহ সময় চেয়েছে ওয়ার্কিং গ্রুপ
ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য প্রস্তাবিত রেগুলেশন ও নীতিমালার ওপর মতামত দেওয়ার সময়সীমা বাড়াতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ফ্রিডম ইনিশিয়েটিভ ওয়ার্কিং গ্রুপ।
অংশীজনদের সঙ্গে এ বিষয়ে অর্থপূর্ণ এবং গভীর সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে খসড়া দুটির ওপর পর্যবেক্ষণ, মতামত ও সুপারিশ দেওয়ার সময়কাল আরও আট সপ্তাহ বাড়ানোর অনুরোধ করেছে তারা। সোমবার (৭ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওয়ার্কিং গ্রুপ এসব তথ্য জানায়।
বিজ্ঞাপন
ওয়ার্কিং গ্রুপ বিবৃতিতে বলে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিটিআরসি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে যথাক্রমে ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্ম রেগুলেশনের খসড়া, ওটিটি কন্টেন্টভিত্তিক পরিসেবা প্রদান এবং পরিচালনা নীতিমালার খসড়া প্রকাশ করা হয়। ওয়ার্কিং গ্রুপ মনে করে, এই দুটি খসড়ার গভীরভাবে মূল্যায়ন প্রয়োজন। ডিজিটাল পাবলিক স্পেস ব্যবহারকারীদের সাংবিধানিক অধিকারের ওপর প্রস্তাবিত আইনি বিধানগুলোর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে কিনা তা পরীক্ষার জন্য ওয়ার্কিং গ্রুপ খসড়া রেগুলেশন ও নীতিমালার পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করতে চায়।
জানা যায়, বিটিআরসি প্রস্তাবিত খসড়া রেগুলেশনের ওপর মতামত জমা দেওয়ার সংশোধিত সময়সীমা ছিল ৫ মার্চ পর্যন্ত। অপরদিকে, তথ্য মন্ত্রণালয়ের খসড়া নীতিমালার ওপর মতামত প্রদানের সংশোধিত সময়সীমা ছিল ৭ মার্চ পর্যন্ত।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নীতিগুলোকে আলিঙ্গন করে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পকে অর্থবহ করে তুলতে নিউ মিডিয়া (ডিজিটাল মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়াসহ) ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য এমন একটি নির্দেশিকা থাকা উচিত যা ডিজিটাল স্পেসে নাগরিকের অধিকারকে সম্মান, সুরক্ষা এবং প্রসার করবে।
ওয়ার্কিং গ্রুপ জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য এবং দেশে একটি উন্মুক্ত, বাধাহীন এবং নিরাপদ ইন্টারনেট চালু করতে বিটিআরসি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায়। পাশাপাশি ডিজিটাল পাবলিক স্পেস ব্যবহারকারীদের সাংবিধানিক অধিকার উপভোগ করতে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অভিজ্ঞতা অনুভব করতে এবং বাংলাদেশের আইন দ্বারা নিশ্চিত করা তথ্যে প্রবেশগম্যতার সুবিধা দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায়।
সংস্থাটি জানায়, ওয়ার্কিং গ্রুপ ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশকে প্রকৃত অর্থে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ রূপান্তর করার বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা স্মরণ করিয়ে দিতে চায়। একইসঙ্গে সংস্থাটি সরকারকে নাগরিকদের চাহিদা পূরণের জন্য একটি ব্যাপক, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক জাতীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায়। যা আন্তর্জাতিক আইন এবং মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হবে। যেখানে ইন্টারনেট হবে নাগরিকদের জন্য ভয়ভীতিহীন মতপ্রকাশের একটি উন্মুক্ত ফোরাম।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ইন্টারনেট ফ্রিডম ইনিশিয়েটিভ ওয়ার্কিং গ্রুপ হলো সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি গ্রুপ। যারা বাংলাদেশের আইন দ্বারা নিশ্চিত অধিকার ভোগ করার জন্য নাগরিকদের সাংবিধানিক, আইনগত এবং নৈতিক অধিকারের প্রধান সমস্যাগুলো সমাধানে সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। গ্রুপটি কৌশলগত অ্যাডভোকেসি, প্রচারণা, বিদ্যমান জাতীয় আইনি কাঠামোর বিশ্লেষণ এবং দেশে ইন্টারনেট স্বাধীনতাকে উৎসাহিত ও অগ্রসর করতে সরকারি নীতি ও অনুশীলনের আইনি সংস্কারের জন্য সুপারিশ করার মাধ্যমে কাজ করে।
এসআর/এমএইচএস