শিক্ষাজীবন থেকেই পাবনার সাঁথিয়ার মেয়ে আফসানা ফেরদৌসী রহমানের স্বপ্ন ছিল বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা হবেন। স্বপ্ন পূরণ করতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকায় পাড়ি জমান আফসানা। ভর্তি হন ঢাকা কমার্স কলেজে। সেখান থেকে অনার্স শেষ করে সরকারি তিতুমীর কলেজ ভর্তি হন আফসানা। মাস্টার্স শেষে করে যখনই ভাবছিলেন বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবেন তখনই ঘটে বিপত্তি। নানা কারণে পরিবারে দেখা দেয় আর্থিক অনটন।

বড় সন্তান হিসেবে পরিবারকে এ সংকট থেকে মুক্ত করার জন্য বিসিএসের স্বপ্ন ভুলে অন্য চাকরি খুঁজতে থাকেন আফসানা। তবে চাকরি খোঁজার মধ্যেই আফসানার চেষ্টা ছিল বিসিএস ছাড়া অন্য কোনোভাবে পুলিশে যোগ দেওয়া যায় কি না। অবশেষে ২০১৭ সালে তার ইচ্ছা পূরণ হয়। ট্রাফিক সার্জেন্ট হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগ পান আফসানা।

প্রশিক্ষণ শেষে ২০১৯ সালে ট্রাফিক সার্জেন্ট হিসেবে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশে (আরএমপি) যোগ দেন তিনি। পরে সেখানে ছয় মাস দায়িত্ব পালনের পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) আসেন আফসানা। তিনি বর্তমানে ডিএমপির গুলশান ট্রাফিক বিভাগের বনানী সিগনালে দায়িত্বরত আছেন। স্বামী ও এক বছরের ছেলে সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছেন।

পাবনার সাঁথিয়া থেকে এসে ঢাকায় পড়াশোনা করে আফসানার ট্রাফিক সার্জেন্ট হয়ে ওঠার গল্পটা সহজ ছিল না। পরিবার ও সমাজের বাধা পেরিয়ে ট্রাফিক সার্জেন্টের মতো চ্যালেঞ্জিং পেশায় আসার গল্পটা আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ঢাকা পোস্টের কাছে তুলে ধরেন আফসানা।

ঢাকা পোস্ট : স্বপ্ন ছিল বিসিএস পরীক্ষা দেবেন, সার্জেন্ট কীভাবে হলেন?

আফসানা : আমার বাবা একজন ব্যবসায়ী ও মা শিক্ষিকা। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে আমি বড়। ২০১৫-১৬ সালের দিকে বেশ কয়েকটি কারণে পরিবারে কিছুটা অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দেয়। তখন আমি ঢাকায় পড়াশোনা করি। পরে সিদ্ধান্ত নিই নিজের খরচটা নিজে চালাব। এরপর থেকে চাকরি খুঁজতে থাকি। এরপর বিসিএসের স্বপ্ন ভুলে ২০১৭ সালে সার্জেন্ট হিসেবে যোগদান করি।

ঢাকা পোস্ট : শিক্ষাজীবন থেকে পুলিশের প্রতি আগ্রহ কেন ছিল?

আফসানা : আসলে শুরু থেকে পুলিশে চাকরি করব এমন স্বপ্ন ছিল না। স্বপ্ন ছিল যেকোনো বাহিনীতে চাকরি করব। বিভিন্ন বাহিনীর পোশাকের প্রতি আমার খুব আগ্রহ ছিল। এভাবে বাহিনীতে কাজ করার স্বপ্ন জাগে। ছোট বেলা থেকে ইচ্ছা ছিল বাহিনীর চাকরি করে দেশ ও মানুষের সেবা করব। এরপর শিক্ষাজীবনের একপর্যায়ে এসে সিদ্ধান্ত নিই বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা হব। পরে পারিবারিক কারণে দ্রুত চাকরিতে যাওয়ার একটা চাপ আসে। তাই শিক্ষাজীবনের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে সার্জেন্ট হিসেবে যোগদান করি। যোগদানের পর থেকে পেশাটাকে আমি খুব উপভোগ করছি।

ঢাকা পোস্ট : নারী হয়ে এমন চ্যালেঞ্জিং পেশায় আসার সময় পরিবারের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?

আফসানা : আমার মা চাইতেন না আমি কোনো বাহিনীতে চাকরি করি। চাকরির পাঁচ বছর হয়ে গেলেও মা এখনো আমাকে নিয়ে অনেক টেনশন করেন। অন্যদিকে বাবা বাধা না দিলেও সার্জেন্টে জয়েন করি, সেটা চাইতেন না। আমি যখন সার্জেন্টের চাকরির আবেদনের কথা বাবাকে বলেছিলাম তখন বাবা বলেছিলেন, সার্জেন্টের চাকরি পেয়ে যদি পুলিশের অন্য কোনো বিভাগে যেতে পার তাহলে আবেদন করো। না হলে দরকার নেই। মা-বাবার শুরু থেকে ধারণা ছিল নারী হয়ে সারাদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করা মেয়ের জন্য কষ্টকর এবং কঠিন। এ ধারণা থেকে তাদের এ বিষয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ছিল।

তবে চাকরিতে যোগদানের পর থেকে আমি নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছি। বাবা-মাও বুঝতে পেরেছেন তাদের মেয়ে সবার সঙ্গে টক্কর দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। নারী হয়েও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি ছেলেদের মতো, তারা এখন আমাকে নিয়ে গর্ব করেন।

ঢাকা পোস্ট : শুধু কি পরিবার নাকি সমাজ ও আত্মীয়-স্বজনরাও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে?

আফসানা : পাড়া প্রতিবেশী থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজন অনেকেই বলেছিলেন, পুলিশ চাকরি নিচ্ছো, দেখবে কী কষ্ট। দুই দিনে চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে আসবে। মেয়ে মানুষের জন্য এসব চাকরি নয়। কিন্তু সবার দোয়া ও ভালোবাসায় গত পাঁচ বছর ধরে সফলতার সঙ্গে ট্রাফিক সার্জেন্ট হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। যারা শুরুতে আমাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিল, তারা এখন দেখা হলে বাহবা দেয়। শুরুতে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার বিষয়ে তারা এখন লজ্জাবোধ করে।

ঢাকা পোস্ট : সমাজের প্রচলিত ধারণা নারীরা সব কাজের জন্য যোগ্য নয়। বিষয়টিকে কীভাবে দেখেন?

আফসানা : এটা একেবারেই ভুল ধারণা। নারীরা সুযোগ পেলে পুরুষের সঙ্গে সমান তালে কাজ করতে পারবে। করোনার সময় আমি সন্তানসম্ভবা ছিলাম, তারপরও দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র আপস করিনি। সেসময় সাত মাসের গর্ভবতী অবস্থায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে ৮ ঘণ্টা ডিউটি করেছি। সবাইকে মনে রাখতে হবে, একজন পুরুষ সার্জেন্টের যে ক্ষমতা ও দক্ষতা নারী সার্জেন্টের ক্ষেত্রেও তা একই। পুরুষদের যেভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে নারীদেরও একইভাবে প্রশিক্ষিত করা হয়। নারী সার্জেন্টরা কোনো অংশেই কারও থেকে পিছিয়ে নেই।

ঢাকা পোস্ট : নারী হিসেবে ট্রাফিক সার্জেন্টের দায়িত্ব কতটুকু চ্যালেঞ্জের?

আফসানা : দক্ষতা বা মানসিক দিক দিয়ে তেমন কোনো চ্যালেঞ্জ মনে হয় না। কাজের ক্ষেত্রে একজন পুরুষ সার্জেন্ট যেভাবে দায়িত্ব পালন করেন, আমরাও একইভাবে কাজ করি। তবে কিছু চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয় মানসিক ধারণার কারণে। এক্ষেত্রে নারী হিসেবে কাজটা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায় অনেক সময়। রাস্তায় যখন পুরুষ সার্জেন্ট থাকেন তখন মানুষ তাকে একভাবে গ্রহণ করে, নারী সার্জেন্ট ডিউটিতে থাকলে মানুষ বিষয়টা ভিন্ন চোখে দেখে। নারী সার্জেন্ট দেখলে তারা মনে করে ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে কোনোভাবে বের হয়ে যেতে পারবে আইনভঙ্গ করে। এমন একটি মানসিকতা সবার মধ্যে থাকে। আমরা প্রশিক্ষণ নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি, সহজে ফাঁকি দিয়ে চলে যাওয়া সম্ভব নয়। আর তা কেউ পারেও না। তবে মানুষের ধারণায় আস্তে আস্তে পরিবর্তন আসছে।

ঢাকা পোস্ট : ট্রাফিক সার্জেন্ট নারী হলে আসলেই কি আইনভঙ্গ করে সহজে বাঁচা যায়?

আফসানা : কোনোভাবেই সম্ভব নয়। যারা এটা মনে করেন তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। সার্জেন্ট নারী বা পুরুষ হোক, তাতে কিছু যায় আসে না। আইনভঙ্গ করলে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। নিয়মভঙ্গের কারণে একজন পুরুষ সার্জেন্ট যেই আইনি পদক্ষেপ নিতেন একজন নারী সার্জেন্টও তাই নেন।

ঢাকা পোস্ট : কর্মজীবনের শুরুতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশে (আরএমপি) কাজ করেছেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি)  ট্রাফিকের দায়িত্ব কতটা চ্যালেঞ্জিং?

আফসানা : ডিএমপিতে ট্রাফিক পুলিশের কাজটা আরএমপির তুলনায় অনেকটা চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে মানুষকে মেনটেইন করা অনেক কঠিন এখানে। গাড়িসহ মানুষকে মেনটেইন করা আরও কঠিন। ঢাকার আবহাওয়া কাজটা আরও কঠিন করে দেয়। গত কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড গরম পড়ছে। এই গরমে ৮ ঘণ্টা ডিউটি করা খুব কষ্টের। এই শহরে ধুলা-ময়লা অনেক বেশি। ফলে সর্দি, কাশি ও জ্বর নিত্যদিনের সঙ্গী। এছাড়া কোলাহলের মধ্যে সারাদিন থাকতে হয়, এর জন্য অধিকাংশ ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের শ্রবণ শক্তি কমে যায়। ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পরও কানের কাছে বো বো  শব্দ শুনতে পাই। তবে এ বিষয়ে কিছু করার নেই। আমাদের কাজের ধরনটাই এমন। এসব জেনেই আমরা চাকরিতে এসেছি।

ঢাকা পোস্ট : দায়িত্ব পালনকালে পুরুষ সহকর্মীদের মনোভাব কেমন থাকে নারী সার্জেন্টদের প্রতি?

আফসানা : আমাদের ১-২ ব্যাচ আগে যারা সার্জেন্ট হয়ে এসেছিলেন, উনাদের সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। ছেলেরা যে কাজটি করত, সেই জায়গায় একটা মেয়েকে নিজের অবস্থান গড়ে তুলতে অনেকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আমাদের এই জায়গাটায় নিজেদের অবস্থান গড়ে তুলতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। আর সবার মনোভাব তো সমান নয়। তবে পুরুষ সহকর্মীরা যদি সাহায্য না করে তাহলে আমাদের জন্য চাকরি করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে। তাদের সাহায্য ছাড়া আমরা চাকরি করতে পারব না।

ঢাকা পোস্ট : পুরুষ সহকর্মীরা কর্মস্থলে কতটা সাহায্য করে?

আফসানা : টুকটাক সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে পুরুষ সহকর্মীদের। আরেকটু হলে আমাদের জন্য ভালো হতো। তবে ধীরে ধীরে মানসিকতা ও অবস্থার পরিবর্তন হবে বলে আমরা আশা করি।

ঢাকা পোস্ট : অনেক সময় দেখা যায়, বিভিন্ন কর্মস্থলে আলাদা ওয়াশরুম বা নামাজের স্থান না থাকায় নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয় নারীদের। এক্ষেত্রে নারী সার্জেন্টরাও কি একই বিড়ম্বনায় পড়েন?

আফসানা : একই বিড়ম্বনায় আমাদেরও পড়তে হয়। কর্মস্থলে আমাদের জন্য আলাদা কোনো ওয়াশরুমের ব্যবস্থা নেই। ওয়াশরুম করাও অনেক কঠিন। এখানে অনেকগুলো বিষয় থাকে। সিটি কর্পোরেশন থেকে শুরু করে অনেকে এ বিষয়ে যুক্ত। রাস্তায় একটা ট্রাফিক বক্স বানানোই অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। জায়গা পাওয়া যায় না। তবে দায়িত্ব তো পালন করতে হবে। তাই সিগনালের আশপাশে কোনো বাসা-বাড়িতে কথা বলে আমরা নিজেরাই ব্যবস্থা করি। আশপাশের বিল্ডিংয়ের মালিকরা অনেক সাহায্য করেন এক্ষেত্রে।

ঢাকা পোস্ট : কর্মজীবনের স্মরণীয় কোনো ঘটনার কথা বলুন, যেটার জন্য প্রশংসা পেয়েছেন

আফসানা : ২০১৯ সালে যখন আরএমপিতে ছিলাম, তখন হাইওয়েতে একটি ট্রাক অপর পাশ দিয়ে আসা একটি ভ্যানকে মেরে দিয়ে শহরে প্রবেশ করে। ঘটনার পরপরই ওয়াকিটকিতে খবরটা আমাদের কাছে চলে আসে। এর মধ্যে আরেকজন ট্রাফিক সার্জেন্ট ওয়াকিটকিতে বলে ট্রাকটি রেললাইন পার হয়ে আফসানার সিগনালের দিকে যাচ্ছে। এ কথা শুনে অন্যান্য সহকর্মীরা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। সবাই তখন ভাবছিলেন আমি তো নারী, ট্রাকটি হয়ত আটকাতে পারব না এবং আটকাতে গেলে উল্টো আহত হতে পারি। কিন্তু আমি বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। ভয় না পেয়ে সামনে দাঁড়িয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিই। চালক আমাকে দেখে বাধ্য হয় গাড়ি থামাতে। যেসব সহকর্মী ভেবেছিল আমি হয়ত ভয়ে ট্রাকটি আটকাতে যাব না, সেসব সহকর্মী ট্রাক আটকানোর পর আমার অনেক প্রশংসা করেছিলেন।

ট্রাকটি আমার পোস্টে আসার আগে আরেকটি পোস্টে আটকানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু ট্রাকটি তারা থামাতে তো পারেইনি, উল্টো একজন কনস্টেবল আহত হয়েছিল।

ঢাকা পোস্ট : বাসা-কর্মস্থল-বাসা এ যাত্রাটা প্রতিদিন হয় কেমন?

আফসানা : প্রতিদিন সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে রান্নার কাজ শেষ করতে হয়। আমার স্বামী একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। অফিসে যাওয়ার আগে তার দুপুরের লাঞ্চসহ সবকিছু রেডি করে দিতে হয়। তারপর বাচ্চাকে খাইয়ে, তাড়াহুড়া করে নাশতা করে বের হয়ে আসি। ডিউটি শেষ করে বাসায় গিয়ে আবার রান্না করি, বাচ্চাকে খাওয়াই। রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত এভাবে কাজ চলতে থাকে। সকাল হলে আবার একই রুটিন শুরু হয়।

ঢাকা পোস্ট : সার্জেন্ট আফসানাকে ভবিষ্যতে কোথায় দেখতে চান?

আফসানা : আপাতত পরিকল্পনা সততার সঙ্গে চাকরিটা করে যাওয়া। কোনো ধরনের ঝামেলা বা বিতর্ক ছাড়া নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে চাই।

ঢাকা পোস্ট : যেসব নারী সার্জেন্ট হতে চান তাদের জন্য আপনার কী উপদেশ থাকবে?

আফসানা : ট্রাফিক সার্জেন্টের কাজটা অনেক চ্যালেঞ্জিং। নারীদের জন্য তো আরও বেশি। এমন নারীদের আমি এ পেশায় আসতে উৎসাহ দেব যাদের ৮ ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ডিউটি করার, যেকোনো পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে আনার মানসিক শক্তি আছে। বাহিনীতে ছুটি কম। বিয়ের পর আমি মাত্র একবার শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। বাহিনীর চাকরির ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনের সময় কোনো পারিবারিক বা ব্যক্তিজীবনের সমস্যা কিংবা চাহিদাকে সামনে আনা যায় না। সবসময় দায়িত্বকে সবকিছুর আগে অগ্রাধিকার দিতে হয়। এসব বিষয় জেনে বুঝে এ পেশায় আসতে হবে।

ঢাকা পোস্ট : কর্মক্ষেত্রে নারীদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে?

আফসানা : সব অধিকারের আগে প্রয়োজন সমান সময়। একজন নারীকে সংসারের যাবতীয় কাজ শেষ করে কর্মস্থলে যেতে হয়। একজন পুরুষকে কিন্তু সংসারের এসব কাজ করতে হয় না। সেই জন্য তার হাতে সময় থাকে বেশি। নারীরা সমান সময় ও সুযোগ পেলে নিজেরাই সম-অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। এখন নারীরা কর্মস্থলে সমান দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। শুধুমাত্র ডিএমপিতে এখন ৩৫-৪০ জন নারী সার্জেন্ট রয়েছেন।

ঢাকা পোস্ট : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আফসানা : ঢাকা পোস্টকেও অনেক ধন্যবাদ।

এমএসি/এসএসএইচ