বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ এনে আন্দোলন করেছিলেন চিকিৎসক-শিক্ষকরা। তারা পরীক্ষা বন্ধের দাবি তোলেন। এ ঘটনায় আন্দোলনরতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলা করে। শেষ পর্যন্ত সেই মামলা থেকে চিকিৎসক-শিক্ষকরা অব্যাহতি পেয়েছেন।

বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (আদালত নম্বর-২) মো. আবুবকর ছিদ্দিকের সই করা এক আদেশে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।

অব্যাহতি আদেশে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষী না পাওয়ায় মামলার দায় থেকে অব্যাহতির প্রার্থনা করা হয়। মামলার এজাহারকারী আদালতে হাজির না থাকা এবং কোনো না-রাজি আবেদন না থাকায় চূড়ান্ত রিপোর্ট ও নথি পর্যালোচনা করে আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মামলা থেকে অব্যাহতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কলঙ্ক মুক্ত হয়েছে। তারা বলেন, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা মামলার কোনো নজির নেই। মামলাটি নিরপেক্ষভাবে তদন্তকাজে সহযোগিতা করায় বর্তমান প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান তারা।

মামলা থেকে অব্যাহতির নোটিশ পাওয়ার পর বিএসএমএমইউর চিকিৎসক-শিক্ষকরা শাখা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। 

এ সময় শাখা স্বাচিপের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. আবু নাসের বলেন, নিরপেক্ষভাবে মামলা তদন্ত করায় বর্তমান প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আমরা সবসময় প্রশাসনকে সহযোগিতা করব।

শাখা স্বাচিপের সদস্য সচিব সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ার্দার টিটো বলেন, বিএসএমএমইউ প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে মামলার তদন্ত করেছে বলেই বিশ্ববিদ্যালয় আজ কলঙ্কমুক্ত হতে পেরেছে। মনে রাখা দরকার, বিশ্বের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই এত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলার নজির নেই।
 
এ সময় বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা থাকার কোনো সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয় হলো গবেষণার জায়গা। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা ও গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

সৌজন্য সাক্ষাতে সহকারী প্রক্টর ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুভাষ কান্তি দে, সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন,  সহযোগী অধ্যাপক ডা. বিদ্যুৎ চন্দ্র দেবনাথ, সহকারী পরিচালক ডা. এহসানুল কবির সুমনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক-শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক নিয়োগে অস্বচ্ছতা ও নিয়োগ বাণিজ্যের প্রতিবাদ করেন বিএসএমএমইউর চিকিৎসক ও শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসনের পক্ষে প্রক্টর বাদী হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

টিআই/আরএইচ