বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ১২‌টি দেশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের স‌ঙ্গে সৌজন‌্য সাক্ষাৎ ক‌রে‌ছেন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ড. মো‌মে‌নের স‌ঙ্গে সাক্ষাৎ ক‌রেন তারা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ড. মো‌মে‌নের সাক্ষা‌তে আসা দূতরা হ‌লেন- নাইজেরিয়ার হাইকমিশনার আহমেদ সুলে, এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রদূত ক্যাট্রিন কিভি, আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ব্রেন্ডন ওয়ার্ড, রুয়ান্ডার রাষ্ট্রদূত মুকাঙ্গিরা জ্যাকলিন, রোমানিয়ার  রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েলা মারিয়ানা সেজোনভ, ডোমিনিকান রিপাবলিকের রাষ্ট্রদূত ডেভিড ইমানুয়েল পুইগ বুচেল, মাল্টার হাইকমিশনার রুবেন গাউসি, কিরগিজ রাষ্ট্রদূত আসউইন ইসায়েভ, ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রিতভা কাউকু-রোন্ডে, সিয়েরা লিওনের রাষ্ট্রদূত রশিদ সেসে, হাঙ্গেরির রাষ্ট্রদূত আন্দ্রাস লাসজলো কিরালি এবং কলম্বিয়ার রাষ্ট্রদূত মারিয়ানা পাচেকো মন্টেস।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী দূত‌দের উদ্দেশে বলেন, আমরা সবসময় শান্তির পক্ষে রয়েছি এবং বিশ্বজুড়ে শান্তির সংস্কৃতি প্রচলনের জন্য অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছি। শান্তি এবং মানবিকতার জন্য আমরা মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের আশ্রয় দিয়ে আমাদের মহানুভবতা দেখিয়েছি। এক্ষেত্রে মিয়ানমারের নাগরিকরা যেন তাদের নিজেদের দেশ মিয়ানমারে নিরাপদে ফেরত যেতে পারে সে জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে এবং তাদের নিজ নিজ দেশের অবস্থান দৃঢ় করতে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের প্রতি আহ্বান জানান মো‌মেন।

নবনিযুক্ত দূতগণ তাদের দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে কাজ করবেন বলে ড. মোমেন আশা প্রকাশ করেন। 

বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে মোমেন বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা বরাবরের মতো অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত এক দশকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দারিদ্রের হার হ্রাস, শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ, গড় আয়ু ৭৪-এ উন্নীত, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ফলে এসব অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে উল্লেখ করে এসব প্রকল্পে আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের অংশগ্রহণের জন্য তিনি ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে মোমেন বলেন, আমাদের দেশে বিনিয়োগের ওপর রিটার্ন এ অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিনিয়োগবান্ধব এবং সরকার বিনিয়োগে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপাদান যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। বিশেষ করে, পর্যাপ্ত ও সহজলভ্য শ্রম শক্তি, তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি, স্বল্পমূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ, পর্যাপ্ত পানি সরবরাহসহ সকল উপাদান বিদ্যমান উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, আমাদের নিজেদের বৃহৎ বাজার রয়েছে। এছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গেও আমাদের অত্যন্ত কার্যকর যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান।

হাঙ্গেরি সরকার কর্তৃক শিগ‌গিরই বাংলাদেশে দূতাবাস চালু করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অন্যান্য অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদেরও তিনি বাংলাদেশে তাদের মিশন কিংবা কনসুলেট প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। রোমানিয়া, নাইজেরিয়া, সিয়েরা লিওনসহ অন্য কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।

রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি নিজ নিজ দেশের সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান। তারা বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও জনসাধারণের কল্যাণে সবসময় পাশে থাকার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।

এনআই/এনএফ