মেট্রোরেল প্রকল্পে আরও ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান। উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণে এই অর্থ দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) নগরীর শেরে বাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ সরকার ও জাপানের মধ্যে ৪২তম ইয়েন লোন প্যাকেজের আওতায় চলমান মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পে বিনিময় নোট ঋণচুক্তি সই হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও জাইকার পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির নিজ নিজ পক্ষে বিনিময় নোট চুক্তি সই হয়। এছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত জাইকা অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউহো হায়াকাওয়ার সঙ্গে ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। ঋণে সুদহার ০ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, যানজট থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দিতে দ্রুত দেশের প্রথম মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। এই প্রকল্পে উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার অংশের কাজ প্রায় শেষের দিকে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে এই অংশে মেট্রোরেল চলাচল উদ্বোধন করা হবে। কাজ চলছে প্রকল্পের বাকি অংশেও। বর্তমানে প্রকল্পে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা জাইকা ঋণ চলমান। ফলে বাড়তি ঋণ যুক্ত হওয়ায় চলমান মেট্রোরেল প্রকল্পে মোট জাইকা ঋণের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ১৭ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা।

জানা যায়, প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুসারে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলমান প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, অনুমোদিত ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। তবে মতিঝিল ছাড়িয়ে মেট্রোরেলের রুট কমলাপুর পর্যন্ত নেওয়ায় প্রকল্পের কাজ বেড়ে গেছে। সেজন্য প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়ে গেছে। আর জাইকার অনুমতি নিয়েই মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত কাজের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে সুতরাং জাইকা বাড়তি ঋণ দিচ্ছে প্রকল্পে।

প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধন প্রস্তাবে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯২ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-জাইকার ঋণ থেকে ১৯ হাজার ৬৭৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। সরকারি তহবিল থেকে ১৩ হাজার ৭৯৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। যদিও প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এখন নতুন করে যে ১১ হাজার ৪৮৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা বাড়ছে, তার মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে আসবে আট হাজার ৪০৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা এবং জাইকার ঋণ থেকে আশা করা হচ্ছে ব্যয় হবে তিন হাজার ৮১ কোটি ১১ লাখ টাকা।

পহেলা জুলাই ২০১২ সাল থেকে ৩০ জুন ২০২৪ মেয়াদে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পের কাজের পরিধি বাড়ছে। সেজন্য পুরো প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে আরও প্রায় এক বছর বেশি সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে মেট্রোরেল প্রকল্পটি শেষ করতে সময় লাগবে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত। ফলে প্রকল্পের মেয়াদ ১ বছর ৬ মাস বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।

এসআর/আইএসএইচ