গুলশান-বনানী-বারিধারার মতো অভিজাত এলাকা এবং যাত্রাবাড়ীর পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের চার্জ যদি সমান হয় তাহলে সবাই তো অভিজাত এলাকায় থাকতে চাইবে। কেউ তো যাত্রাবাড়ী বা কম সু্যোগ-সুবিধা সংবলিত এলাকায় থাকবে না। তাই জোনভিত্তিক সার্ভিসের মূল্য নির্ধারণ করা এখন সময়ের দাবি। 

বুধবার (৩০ মার্চ) গুলশান ২ -এ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হলরুমে আয়োজিত রাজস্ব বিভাগের অটোমেশন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।  

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমতাভিত্তিক ও বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার প্রতিটি নাগরিকের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করে। গরিবদের টাকা দিয়ে তো ধনীদের সাবসিডি দেওয়ার সুযোগ নেই।

তাজুল ইসলাম বলেন, ভালো শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার কথা বলে সবাই ঢাকায় থাকতে চায়। বিশ্বের সব দেশের মানুষ সেদেশের মেইন সিটিতে থাকে না। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা কি সারাদেশের মানুষকে ঢাকায় নিয়ে আসবো কি না। ঢাকা শহরে যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। মানুষ ও যানবাহন যে হারে বাড়ছে, তাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ঢাকা শহরে যানবাহনের গতি মানুষের হাঁটার গতির চেয়েও কম হবে।

তিনি আরও বলেন, শুধু বাসাবাড়িতে থাকলে হবে না। আমাকে অফিসে যেতে হবে, হাসপাতাল যেতে হবে, ছেলে-মেয়েদের স্কুলে নিতে হবে, বাজারে যেতে হবে। চলাচলের জন্য রাস্তার ব্যবস্থা না রেখে শুধু বিল্ডিং করে মানুষের আবাসনের ব্যবস্থা করলে ঢাকা শহর বসবাসের উপযোগিতা হারাবে।

মন্ত্রী বলেন, অটোমেশনের মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে নাগরিক সেবা সহজ করার পাশাপাশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব। অটোমেশন ব্যবস্থাপনায়ও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে সেগুলোকে মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সিস্টেমে ইন্টারাপ্ট করার অপচেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম অটোমেশন করার উদ্যোগের প্রশংসা করে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, শুধু আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে করাপশন হয় না। নাগরিককে তার প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত করাও করাপশন। তাই এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নগর গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

এএসএস/আরএইচ