স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম

বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকলে দেশের দারিদ্র্যের হার কমে যুক্তরাষ্ট্রের নিচে চলে আসবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ৫০০ আসন বিশিষ্ট নুর-ই-আলম চৌধুরী অডিটোরিয়াম কাম মাল্টিপারপাস হলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দারিদ্র্যের হার ১০ শতাংশের বেশি, বাংলাদেশে ২০ শতাংশ। শেখ হাসিনার আমলে দারিদ্র্য যেভাবে কমে আসছে আমি বিশ্বাস করি, খুব দ্রুতই আমাদের দারিদ্র্যের হার যুক্তরাষ্ট্রের নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হব। এত অল্পসময়ের মধ্যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হওয়ায় বাংলাদেশ আজ বিশ্বে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চিত্র বদলে যাবে উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। পাল্টে যাবে এলাকার উন্নয়নের চিত্র। ট্যুরিজম, অর্থনীতি এবং শিল্প কল-কারখানা যোগাযোগসহ সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হবে। পদ্মা সেতুর ফলে দেশের জিডিপি এক শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, এতে দেশে দারিদ্র্যের হার কমবে পাঁচ ভাগ।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন। সেখানে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। প্রধানমন্ত্রী মানুষকে উন্নত জীবন ব্যবস্থা দেওয়ার জন্য শুধু অঞ্চল ভিত্তিক নয়, প্রতিটি মানুষের কথা চিন্তা করেই কাজ করছেন। শেখ হাসিনা জানেন দেশের একজন মানুষকে পিছিয়ে রেখে স্বাধীনতার সুফল পাওয়া সম্ভব না।

তিনি বলেন, পানি প্রবাহ ঠিক রাখা, নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে নদী খনন এবং চর কেটে গতিপথ তৈরি করাসহ জলবায়ুজনিত ক্ষতিরোধে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে ৩৮টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনাসহ বিভিন্ন নদীর ভাঙনে অনেক ঘরবাড়ি, মসজিদ-মন্দির, স্কুল বিলীন হয়ে যাওয়া ঠেকানো সম্ভব হবে।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশ অনেক এগিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ পাঠানোর পর সরকার এখন দ্বিতীয় স্যাটেলাইট পাঠানোর জন্য কাজ করছে। নতুন প্রজন্ম তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত হলে শিবচরের মতো দেশের যেকোনো এলাকায় ঘরে বসে হাজার হাজার ডলার আয় করা সম্ভব হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন, নির্যাতিত ও অত্যাচারিত হয়েছেন। তারপরও তিনি লড়াই সংগ্রাম থেকে পিছু হটেননি। হাটে, মাঠে-ঘাটে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে বাঙালিকে স্বাধীনতা উপহার দিয়েছেন। সেই দেশ এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী।

এ সময় স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মেজবাহ উদ্দিন, এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশিদ খান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

এসআর/এমএইচএস