এবার আগেভাগেই ঈদের কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন অনেকে। প্রতি বছর রমজানের শেষ দিকে ক্রেতা বেশি দেখা গেলেও এবার শুরু থেকেই বিপণিবিতানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সরগরম থাকছে নিউমার্কেট, বঙ্গবাজার, বসুন্ধরা সিটি ও যমুনা ফিউচার পার্কসহ রাজধানীর বেশির ভাগ সুপার মার্কেট। শনিবার (১৬ এপ্রিল) নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কোথাও কোনো ফাঁকা জায়গা নেই; সর্বত্র লোকে লোকারণ্য। গোটা এলাকায় হাজার হাজার নারী-পুরুষ-শিশু ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত। 

নিউ মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, নূর ম্যানশন মার্কেট, ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট, নুরজাহান সুপার মার্কেট, গ্লোব শপিং সেন্টারসহ নিউমার্কেট এলাকার সবগুলো বিপণিবিতানে আজ ক্রেতাদের অতিরিক্ত ভিড় দেখা গেছে। পাঞ্জাবি, শাড়ি, থ্রি পিস, শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট, কসমেটিকসসহ সব পণ্যের দোকানেই ক্রেতাদের ভিড়। চলছে বিরতিহীন বিকিকিনি। সকালের তুলনায় দুপুরের পর মানুষের উপস্থিতি ছিল বেশি। মার্কেটে আসা মানুষের চাপে মিরপুর রোডের উভয় পাশে তৈরি হয় যানজট। সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা যায় ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের নিচতলা ও দোতলার বিভিন্ন শাড়ির দোকান আর ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের দোতলার পাঞ্জাবির দোকানগুলোতে।

কেনাকাটা করতে আসা মানুষজন বলছেন, কয়েকদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি যেতে অনেকে অপেক্ষায় আছেন। তাই শেষ মুহূর্তের তড়িঘড়ির অপেক্ষা না করে আগেভাগেই মার্কেটে আসছেন তারা।

রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকা থেকে আসা সেলিমা রহমান বলেন, রোজা রেখে রোদের মধ্যে কেনাকাটা করাটা খুব কষ্টকর। তারপরও পরিবার-পরিজনের জন্য কেনাকাটা করতে চলে এসেছি। সন্ধ্যার আগে-পরে সাংসারিক কাজ থাকায় বের হওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠে না। তাই দিনের বেলা এসেছি। অন্য সময়ের চেয়ে এবার ভিড় বেশি মনে হচ্ছে।

দীর্ঘদিন পর ক্রেতাদের এমন উপস্থিতি দেখে খুশি বিক্রেতারা। তারা বলছেন, এবারের ঈদে ভালো বেচাকেনা করতে পারলে গত দুই বছরের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।

ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের বিক্রয়কর্মী অন্তর হালদার বলেন, প্রায় দুই বছর তো দোকান খুলতে পারিনি। এবার রমজানের শুরু থেকে ক্রেতাদের আনাগোনা ভালো। বিশেষ করে পহেলা বৈশাখের পর থেকে গত দুই দিন ধরে অনেক ক্রেতা আসছেন। রোজার শেষ সময় পর্যন্ত এমন ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আমরা লাভবান হব।

ক্রেতার উপস্থিতি এরকম ভালো থাকলে এবারের ঈদে ১০ কোটি টাকা বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে বলে জানান ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ) বণিক সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মো. শহীদুল্লাহ। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাশা করছি করোনাকালে আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে তার অধিকাংশই এবার পুষিয়ে নিতে পারব।

তিনি বলেন, তবে এক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে সড়কের যানজট। যানজট বেশি থাকায় মানুষ ঘর থেকে বের হতে চান না। এ সমস্যার সমাধান করা দরকার। তা না হলে ভালো পরিবেশ-পরিস্থিতি পেয়েও ব্যবসায়ীরা খুব বেশি সুবিধা করতে পারবেন না।

আরএইচটি/এসএসএইচ/জেএস