নিউ মার্কেটে সংঘর্ষ নিয়ে ব্যবসায়ীদের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে সড়কে নেমেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা একাধিক দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। 

বুধবার বিকেল ৫টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে আসেন। এ সময় কয়েকটি বাজি ফাটানোর আওয়াজ শোনা যায়। এ ঘটনায় মিরপুর রোডে যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কে নেমে আসা শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান দিচ্ছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। যান চলাচল একেবারেই বন্ধ রয়েছে। নিউ মার্কেটের সামনে ব্যবসায়ীরা সড়কে নেমে এলেও পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই ব্যবসায়ীরা একতরফাভাবে সংবাদ সম্মেলন করে সংঘর্ষের পেছনে তাদের দায়ী করেছেন। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের দায়ী করে ব্যবসায়ীদের দেওয়া এ বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত নিউ মার্কেটের সব দোকান বন্ধ রাখতে হবে। 

এর আগে দুপুরে নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, সোমবার রাত আনুমানিক ১১টার সময় দুটি ফাস্টফুডের দোকানের দুই কর্মচারীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর একদল তরুণ মার্কেটের চার নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়।

তখন আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সাহায্য চাই, তারা তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের সাহায্য করেন। আমরা জানতে পারি, এ ঘটনায় ঢাকা কলেজের ছাত্ররা জড়িত। মঙ্গলবার আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বললে আমরা বন্ধ রাখি। এরপরও একদল উশৃঙ্খল যুবক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া অব্যাহত রাখে।

ব্যবসায়ী নেতাদের এ বক্তব্য প্রত্যাহার চান ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা।

গত সোমবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। চলে প্রায় রাত তিনটা পর্যন্ত। এর জেরে মঙ্গলবার দিনভর আবার দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। 

সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী এবং প্রায় অর্ধশত ব্যবসায়ী-কর্মচারী আহত হন। দুই শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হওয়া কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী নাহিদ হোসেন মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেলে মারা যান। ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি আছেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে।

সংঘর্ষের খবর সংগ্রহে গিয়ে ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীদের হামলায় আহত হয়েছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের অন্তত ৯ জন সাংবাদিক।

শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ীদের এ সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে ১২টার দিকে। ফলে বাধাহীনভাবে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া আগের রাতের সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার সকালে পুলিশের কোনো সতর্কতামূলক পদক্ষেপ সেখানে দেখা যায়নি।

আরএইচটি/আরএইচ/জেএস