দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম। তিনি দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এ দণ্ড মাথায় নিয়েই শনিবার বিকেলে গোপনে তিনি দেশ ছেড়েছেন। সেলিম থাইল্যান্ডের ব্যাংককে পাড়ি জমিয়েছেন। কোন বিমানবন্দর দিয়ে তিনি দেশ ছেড়েছেন তা অবশ্য জানা যায়নি । 

হাজী সেলিমের বড় ছেলে সোলাইমান সেলিম রোববার একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রশ্নের জবাবে স্বীকার করেছেন তার বাবা এখন দেশের বাইরে। আজ সোমবার বিকেলে ঢাকা পোস্টের পক্ষ থেকে সেলিমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

হাজী সেলিম দেশ ছেড়েছেন কি না জানতে যোগাযোগ করা হয় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’

ইমিগ্রেশন পুলিশের দুপুরের শিফটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ‘এখানে ৮ ঘণ্টা করে তিন শিফটে তিনজন অফিসার দায়িত্ব পালন করেন। দুপুরের শিফট চলাকালীন হাজী সেলিম নামে কেউ দেশ ছাড়েনি। অন্য শিফটের বিষয়ে আমি বলতে পারছি না।’

ঢাকা বিমানবন্দর এপিবিএনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ঢাকা বিমানবন্দরে বেশ কয়েকটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংস্থা কাজ করে। তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি না। তিনি অন্য কোনো বিমানবন্দর বা বন্দর দিয়ে দেশ ছাড়তে পারেন।’

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সংসদ সদস্য (এমপি) হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম মনে করেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় হাজী সেলিমের সংসদ সদস্য পদ আর নেই। গতকাল একটি টেলিভিশনে তিনি বলেন, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিদেশ যেতে পারেন না। তার তো আত্মসমর্পণ করার কথা।

যেহেতু সর্বোচ্চ আদালত হাজী সেলিমকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার আদেশ দিয়েছেন, সেহেতু তিনি কোনোভাবেই দেশত্যাগ করতে পারেন না বলে মনে করছেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী (মানিক)।

রোববার বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, সর্বোচ্চ আদালত তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার আদেশ দিয়েছেন। এ অবস্থায় তিনি কোনোভাবেই দেশত্যাগ করতে পারেন না। যারা তাকে দেশত্যাগে সাহায্য করেছেন, তারা বড় অপরাধ করেছেন। তারা সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করেছেন। এখন তিনি দেশে ফিরে না এলে তখন কী হবে? সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তার দেশে ফেরার সম্ভাবনাও কম।

এআর/আরএইচ