রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে কেন্দ্র করে প্রচুর মানুষ বাড়ি যাওয়ায় রাজধানী এখন ফাঁকা। ফাঁকা ঢাকাকে নিরাপত্তা দিতে মাঠে সক্রিয় থাকছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। গত শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) থেকেই রাজধানীর জন্য বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে ডিএমপি।

ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কাল ঈদ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে মানুষজন বাড়ি গেছে। আর ঈদের ছুটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজধানীতে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি থাকবে পুলিশের।

অন্যদিকে ডিএমপির বেশ কয়েকটি থানা সূত্রে জানা গেছে, ঈদের এক দিন আগে থেকে ঢাকার নিরাপত্তার জন্য কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে থানাগুলোতে। ফাঁকা ঢাকার বাসা বাড়ি ও রাস্তায় যেন কোনো চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি না ঘটে, সেজন্য থানাগুলোকে আবাসিক এলাকা থেকে শুরু করে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঈদের ছুটিতে রাজধানীকে নিরাপদ রাখতে পুলিশের এই তৎপরতা মাঠ পর্যায়েও দেখা গেছে। ডিএমপির বিভিন্ন থানার টহল টিমকে সোমবার (২ এপ্রিল) সকাল থেকে বিশেষ নজরদারি করতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, টহল টিমগুলো প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে আবাসিক এলাকার অলিগলিতে যাচ্ছে। বাসা বাড়ির দারোয়ানদের সঙ্গে কথা বলে সার্বিক তথ্য জানছে, কোনো সমস্যা আছে কি না। এছাড়া আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকাগুলোতে কারো গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি করা হচ্ছে।

রাজধানীর গুলশান এলাকায় টহলরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদমর্যাদার  এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এবারের ঈদে খুব কড়া নির্দেশ রয়েছে ডিএমপির সদর দপ্তর থেকে। ফাঁকা ঢাকায় বাসাবাড়িতে যেন চুরি-ডাকাতি না হয় সেই নির্দেশ দেওয়া আছে।

অন্যদিকে ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরাও তৎপর রয়েছেন। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকভাবে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে ডিবি।

ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, এরইমধ্যে থানা ও ডিবি পুলিশ যৌথভাবে প্রায় ৫০০ ছিনতাইকারী ও চোরকে গ্রেপ্তার করেছে।

ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তা নিয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে ঢাকায় রাতদিন ৫০০টি মোবাইল টিম কাজ করছে। আর রাতে আড়াই হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য ঢাকার নিরাপত্তায় কাজ করছে। বিশেষ করে বাসাবাড়িতে ছিনতাই-ডাকাতি এড়ানোর জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, দুই দিন আগে থেকেই এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা শুরু হয়েছে, যা আজ আরও জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে ফাঁকা ঢাকায় বেপরোয়া গতিতে চলে যানবাহনগুলো যেন দুর্ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য বিশেষ ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, আজ (সোমবার) থেকে ঢাকার মানুষ কমে গেছে, প্রায় নীরব হয়ে গেছে ঢাকা শহর। এরইমধ্যে ট্রাফিক বিভাগ চেকপোস্ট স্থাপন ও ব্যারিকেড দেওয়ার কাজ করছে। যাতে ফাঁকা রাস্তায় দ্রুতগতিতে বেপরোয়া যানবাহন চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাতে না পারে।

এমএসি/জেডএস