কুমিল্লায় মালবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় দুর্ভোগে পড়েছেন চট্টগ্রাম স্টেশনে থাকা ঢাকাগামী মহানগর গোধূলি ট্রেনের যাত্রীরা। সোমবার (৯ মে) দুপুর তিনটা সময় ঢাকার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম মহানগর গোধূলি ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ছেড়ে যায়নি। 

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনটি সন্ধ্যা ছয়টার পর ছেড়ে যেতে পারে। এছাড়া ঢাকাগামী সোনার বাংলা ট্রেনের বিলম্ব হতে পারে বলে জানা গেছে। তবে সকাল থেকে দুপুর সাড়ে বারটা পর্যন্ত চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে বাকি ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ঘোষণা কক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রাম এসে পৌঁছায়নি। এটি চট্টগ্রাম স্টেশনে সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ পৌঁছাতে পারে। এখানে পৌঁছানোর পরে মহানগর গোধূলি হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে যাবে। ট্রেনটির যাত্রীদের টিকিট ফেরত দিয়ে টাকা নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে।  আর যারা ট্রেনে যেতে ইচ্ছুক তাদেরকে ধৈর্য্য ধরতে বলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ঘুরে দেখা যায়, মহানগর গোধূলি ট্রেনের যাত্রীরা প্লাটফর্মে ট্রেনের অপেক্ষায় আছেন। আবার কেউ কেউ কাউন্টারে টিকিট ফেরত দিয়ে বিকল্প পথেও চলে যাচ্ছেন। 

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্লাটফর্মে বসা ছিলেন মাইন উদ্দিন নামের এক যাত্রী। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, কক্সবাজার ঘুরতে গিয়েছিলাম। যাওয়ার সময়ই অগ্রিম টিকিট নিয়ে গিয়েছিলাম। নির্ধারিত সময়ের আগেই স্টেশনে এসে দেখি ট্রেন আসেনি। এখন শুনছি সন্ধ্যা ছয়টায় ছাড়বে। এই গরমে বাচ্চাদের নিয়ে বসে থাকা কষ্টকর।

প্লাটফর্মে কথা হয় মহানগর গোধূলি ট্রেনের আখাউড়ার যাত্রী কামরুল হাসানের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুপুর আড়াইটার দিকে স্টেশনে এসেছি। ট্রেন ছাড়ার সময় পার হয়ে গেলেও ট্রেনের খবর নেই। এখন বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই। আখাউড়া যেতে যেতে অনেক রাত হয়ে যাবে। 

ফখরুল ইসলাম নামের আরেক যাত্রী বলেন, ট্রেন ছাড়তে ছয়টা বাজবে। তাই কাউন্টারে টিকিট ফেরত দিয়ে দিয়েছে। এখন বাসে চলে যাব।

চট্টগ্রামে রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার (২) শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল থেকে দুপুর সাড়ে বারটা পর্যন্ত সব ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে। তবে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রামে এখনও আসেনি। এই ট্রেনটি চট্টগ্রাম পৌঁছে মহানগর গোধূলি হয়ে ছেড়ে যাবে। এটি পৌঁছাতে পৌঁছাতে সন্ধ্যা ছয়টা বাজতে পারে। এছাড়া ঢাকাগামী সোনার বাংলা ট্রেনটিও নির্ধারিত সময়ে চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যেতে পারবে না।

উল্লেখ্য, ৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সোমবার (৯ মে) দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লাকসাম রেলওয়ে জংশনের সহকারী প্রকৌশলী লেয়াকত আলী মজুমদার।

তিনি জানান, লাইন মেরামতকাজ শেষ করে উদ্ধারকারী ট্রেন লাকসাম ও আখাউড়া রেলওয়ে জংশনে পৌঁছেছে। বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম, কুমিল্লা-সিলেট, ঢাকা-নোয়াখালী রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

এর আগে রোববার (৯ মে) দিবাগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী মালবাহী ট্রেন বুড়িচং রাজাপুর স্টেশন এলাকায় এলে তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আজ দুপুরে আবার চালু হয়।

সহকারী প্রকৌশলী জানান, রেলওয়ের একাধিক টিম লাইন মেরামতের কাজ করেছে। বগিগুলো উল্টে লাইন বাঁকা হয়ে যায়। ফলে মেরামতে সময় লেগেছে। স্বাভাবিক হওয়ার পর কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া শশীদল রেলস্টেশন থেকে তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেন চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।

কেএম/আইএসএইচ