কোভিড-১৯ সার্টিফিকেট সংক্রান্ত প্রতারণার অভিযোগে একটি চক্রের সাত সদস্যকে রাজধানীর বনানী থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

র‌্যাবের দাবি, বিদেশগামী যাত্রীদের জিম্মি করে কোভিড-১৯ সার্টিফিকেট সমস্যার সমাধানের কথা বলে নানাভাবে প্রলুব্ধ করে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয় চক্রটি।

রোববার (১৫ মে) বিকেলে উত্তরার র‌্যাব-১ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

তিনি বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিদেশগামী সাধারণ যাত্রীদের কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট একটি আবশ্যিক বিষয়। কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখাতে না পারলে বিদেশে যাওয়া যায় না।

 

এ দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একটি প্রতারক চক্র বেশ কিছুদিন ধরে বিদেশগামী যাত্রীদের জিম্মি করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছে। যাত্রীদের জিম্মি করে কোভিড-১৯ সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সমস্যার বিষয়ে সমাধানের কথা বলে নানাভাবে প্রলুব্ধ করে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। গত কয়েক মাসে যাত্রীদের কাছ থেকে চক্রটি লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানান র‍্যাবের এ কর্মকর্তা। 

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, প্রতারণার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে দ্রুততার সাথে ছায়াতদন্ত শুরু করে র‍্যাব ১, পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে র‌্যাব-১ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বনানী থানাধীন মহাখালী কোভিড-১৯ হাসপাতালের সামনে বিদেশগামী যাত্রীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহের উদ্দেশ্যে প্রতারক চক্রের কয়েকজন সদস্য অবস্থান করছেন।

পরে মহাখালী কোভিড-১৯ হাসপাতালের সামনে অভিযান চালিয়ে চক্রের সক্রিয় সাত সদস্যকে আটক করা হয়। আটকরা হলেন, জসিম উদ্দিন (২৮), মো. তারেকুল ইসলাম (২৬), আলমগীর হোসেন (২০), মো. রিপন মিয়া (২৮), আরিফুল ইসলাম (২০), আহম্মেদ হোসেন শাহাদাৎ (১৮) ও  শামীম হোসেন (৩০)।

তাদের কাছ থেকে ভুয়া কোভিড-১৯ টেস্টের পজিটিভ ও নেগেটিভ সার্টিফিকেটের ফটোকপি, বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদান প্রদানে ব্যবহৃত দুটি সিম কার্ড, প্রবাসীদের মোবাইল নম্বর সংবলিত তিনটি টোকেন, একটি পেনড্রাইভ (যার মধ্যে আসামিদের ডাক্তার, স্টাফ ও নার্স হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারণামূলক কথোপকথন রেকর্ডিং সংরক্ষিত), নগদ ৪১ হাজার ৮৬৯ টাকা, ডাচ বাংলা ব্যাংকের একটি এটিএম কার্ড ও আটটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয় বলে জানান র‍্যাবের এ কর্মকর্তা।  

আটকরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। চক্রের সদস্যরা বিদেশগামী যাত্রীদের কাছে নিজেদের কোভিড-১৯ হাসপাতালের ডাক্তার, স্টাফ ও নার্স পরিচয় দিয়ে বিশ্বাস অর্জন করে। পরে যাত্রীদের কোভিড-১৯ এর ভুয়া নেগেটিভ সার্টিফিকেট দিয়ে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়।

চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে পরস্পর যোগসাজশে একে অপরের সহযোগীতায় রাজধানীর বনানীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বিদেশগামী যাত্রীদের কোভিড-১৯ সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সমস্যার বিষয়ে সমাধান করার কথা বলে বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

জেইউ/আরএইচ