ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, আমি ইউএন নেটওয়ার্ক অন মাইগ্রেশনকে শহুরে জলবায়ু অভিবাসন দ্বারা সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে আমাদের আহ্বানে সাড়া দিতে আহ্বান জানাই।

মঙ্গলবার (১৭ মে) দিবাগত রাতে নিউইয়র্ক সময় সকাল ১০টায় নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণে আন্তর্জাতিক অভিবাসন রিভিউ ফোরামের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি। বিশ্বের সাতটি শহরের মেয়ররা এতে যোগ দিয়েছেন।

বিশ্ব মেয়রদের এই মেয়র মাইগ্রেশন কাউন্সিল (এমএমসি) লিডারশিপ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন মঙ্গলবার মধ্যরাতে নিউইয়র্কে মেয়র আতিকুল ইসলাম বক্তব্যের বিষয়টি তুলে ধরেন।

ওই বৈঠকে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে মেয়র মাইগ্রেশন কাউন্সিলের লিডারশিপ বোর্ডের সদস্য, সি ৪০ সিটির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সি৪০-এমএমসি টাস্কফোর্স অন ক্লাইমেট অ্যান্ড মাইগ্রেশনের সহ-প্রধান হিসেবে, গ্লোবাল মাইগ্রেশন গভর্ন্যান্সে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করার এই সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত।

তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার লোক ঢাকা শহরে আসে, তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ জলবায়ু অভিবাসী যা অপর্যাপ্ত খাবার পানির জন্য, ঘূর্ণিঝড় বা আকস্মিক বন্যার শিকার হওয়া, নদীর তীর ভাঙন বা লবণাক্ততায় অনুপ্রবেশের কারণে কৃষি জমি হারায়। তাদের এই আগমন আমাদের পরিবেশ এবং পরিষেবা প্রদানের ক্ষমতার ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, তবে এটি অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি সুযোগও তৈরি করে যদি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায়, বিশেষ করে গ্রিন সেক্টরে।

মেয়র বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি এবং গ্লাসগোতে কপ-২৬ এ জলবায়ু উদ্বাস্তু এবং জলবায়ু অভিবাসীদের জন্য জলবায়ু ন্যায়বিচার (ক্লাইমেট জাস্টিস) নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা উত্তর সিটিও এক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে। এই সপ্তাহে আমি ইউএন মাইগ্রেশন এবং রিফিউজি এজেন্সির সঙ্গে অংশীদারিত্বে অভিবাসী এবং শরণার্থীদের জন্য স্থানীয়ভাবে ভূমিকা রাখার আহ্বানে অন্যান্য মেয়রের সঙ্গে নিউইয়র্ক সিটিতে এসেছি। আমরা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতিকে ৭০টি স্থানীয় সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রদান করছি, যা অভিবাসীদের জীবনে পরিবর্তন আনবে এবং বিশ্বকে প্রতিশ্রুতি পূরণের পথে রাখবে। ঢাকা উত্তরের মেয়র হিসেবে, আমার আইএমআরএফ অঙ্গীকার হলো শহুরে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুতরা রয়েছে। এটি বিশেষ করে তাদের স্বাস্থ্যের ওপর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু আমার এই প্রতিশ্রুতির সঙ্গে আইএমআরএফ দেশগুলোর কাছে আমাদের কিছু প্রস্তাবনা আছে। প্রস্তাবনাগুলো হলো— জাতীয় জলবায়ু, অভিবাসন এবং উন্নয়ন নীতিগুলোতে শহরগুলোকে জড়িত করা যেমন— এনডিসি এবং অভিবাসন এবং স্থানান্তরিত জনগণের জন্য জাতীয় কৌশল প্রণয়ন। অভিবাসী এবং উদ্বাস্তুদের জন্য গ্লোবাল সিটি ফান্ড গড়ে তোলা, যাতে সিটি গভর্নমেন্ট সরাসরি অর্থায়ন প্রক্রিয়া তৈরি করতে এবং বিনিয়োগ করতে পারে। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু অর্থের প্রবাহের অন্তত ৫০ শতাংশ অভিযোজন অর্থায়নের জন্য বরাদ্দ এবং এই অর্থ যেন ক্ষতিগ্রস্ত দেশের সংকট নিরসনে ব্যবহার করা হয়।

বৈঠকে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলামকে ‘লিডারশিপ অব এমএমসি’তে আগামী তিন বছরের জন্য অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এএসএস/এসএসএইচ