বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোনো মাঙ্কিপক্স রোগী শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, মাঙ্কিপক্স নিয়ে গুজব বা আতঙ্ক নয়, বরং আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। 

মঙ্গলবার (২৪ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। 

উপাচার্য বলেন, করোনা মহামারিকে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেভাবে মোকাবিলা করেছি, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিয়ে যেভাবে বাংলাদেশে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে দেইনি, সেরকমভাবে আমরা মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের জন্যও প্রস্তুত আছি।

তিনি বলেন, গতকাল (সোমবার) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাঙ্কিপক্সের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়। যা ছিল নিছক একটি গুজব। বিষয়টি প্রথমে আমাদের নজরে আনেন গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল কিছু সংখ্যক সাংবাদিক ভাইয়েরা। তাদের এ তথ্যে আমাদের প্রশাসন আরো তৎপর হয়। এরপর আমরা খোঁজ নেওয়া শুরু করি আসলে কী ঘটেছে।

শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, গুজব রোধ এবং গুজব রটনাকারীকে খুঁজে পেতে গণমাধ্যমকর্মীদের পাশাপাশি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্র্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনের কাছে মৌখিকভাবে সহযোগিতা চাওয়া হয়। সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনের তড়িৎ পদক্ষেপে আমরা জানতে পারি নোয়াখালী জেলার সেনবাগ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. আসিফ ওয়াহিদ অর্কের বরাতে সংশ্লিষ্ট গুজব পোস্ট হয়, পরে তার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তবে ডা. আসিফ ওয়াহিদ জানান এমন কোনো ঘটনা তিনি জানেন না। তিনি এমন পোস্টও করেননি।

তিনি আরও বলেন, ডা. আসিফ ওয়াহিদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের নতুন ভর্তিকৃত রেসিডেন্ট হলেও কোনো ক্লাস করেননি। যার ফলে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা তাকে ট্রেস করতে পারিনি। তিনি ৩৯তম বিসিএসের স্বাস্থ্য ক্যাডার। 

বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ খুব ভালোভাবেই করোনাভাইরাস মোকাবিলা করতে সমর্থ হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও প্রতিকার ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ প্রথম হয়েছে। এ বিষয়ে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ ২৬তম অবস্থানে আছে। অন্যান্য রোগেরও মতো বৈশ্বিক সংকট মাঙ্কিপক্স নিয়েও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বেশ সতর্ক রয়েছে।

সোমবার (২৩ মে) বিএসএমএমইউয়ে মাঙ্কিপক্স রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয়। ওইদিন বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. আসিফ ওয়াহিদের বরাত দিয়ে সর্বপ্রথম এমন গুজব ছড়ানো হয়। এরপর এটি ফেসবুকে ছড়িয়ে যায়।

তবে বিষয়টিকে গুজব উল্লেখ করে সন্ধ্যায় বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনো একটি পক্ষ এমন গুজব ছড়িয়েছে।

টিআই/জেডএস