সপ্তম যৌথ পরামর্শক কমিশন (জেসিসি) বৈঠক এবং আসামের শিংলভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও থিঙ্কট্যাংক এশিয়ান কনফ্লুয়েন্সের আয়োজনে গৌহাটিতে নদী বিষয়ক কনক্লেভে যোগ দিতে শুক্রবার (২৭ মে) ভারত সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, শুক্রবার সকালে ভারতের উদ্দেশে রওনা হবেন ড. মোমেন। চার দিনের সফরের শুরুতে ভারতের আসামের শিংলভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও থিঙ্কট্যাংক এশিয়ান কনফ্লুয়েন্স আয়োজনে ২৮ ও ২৯ মে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠেয় গৌহাটিতে নদী বিষয়ক কনক্লেভে যোগ দেবেন মোমেন। এতে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও থাকবেন। এজেন্ডা ভিত্তিক কোনো আলোচনা না হলেও কনক্লেভে দুই দেশের নদী কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আশা করা হচ্ছে, গৌহাটিতে মোমেন-জয়শঙ্কর সাইড লাইনে বৈঠকে বসবেন।

গৌহাটি থেকে ড. মোমেন বাংলাদেশ ও ভারতের সপ্তম জেসিসি বৈঠকে যোগ দিতে নয়াদিল্লি যাবেন। সোমবার (৩০ নভেম্বর) বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে ঢাকার পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও নয়াদিল্লির পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নেতৃত্ব দেবেন। বৈঠকে উভয়পক্ষের দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিশেষ করে বাণিজ্য, কানেকটিভিটি, পানি, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুসহ নতুন নতুন অনেক ক্ষেত্রে একে অপরকে সহযোগিতার বিষয় উঠে আসবে। ঢাকার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সফর চূড়ান্ত করাসহ হাজার হাজার কোটি টাকা আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দেশটিতে গ্রেপ্তার পি কে হালদারকে বাংলাদেশে দ্রুত ফেরত আনতে নয়াদিল্লির সহযোগিতা চাওয়া হবে।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস ঢাকা পোস্টকে বলেন, দ্বিপক্ষীয় এজেন্ডায় যা যা আছে সবই থাকছে। ট্রেড আছে, কানেকটিভিটি আছে, কমার্স সেক্টর কোঅপারেশন, ওয়াটার কানেকটিভিটি আছে, সেখানে তিস্তা, কুশিয়ারা, ছয়টি অভিন্ন নদীসহ সব থাকবে। এছাড়া আইসিটি, ফুড সিকিউরিটি রয়েছে, রিনিউয়েবল এনার্জি, ক্লাইমেট ইস্যু আছে।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, মোমেন-জয়শঙ্কর বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর চূড়ান্ত হবে। আর এটি আগামী মাসের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে হতে পারে। তাছাড়া বৈঠকে তিস্তা প্রসঙ্গ তোলাসহ আলোচনাধীন কুশিয়ারা নদীর পানি উত্তোলন বিষয়টিতে সুরাহার জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের প্রস্তুতির তাগাদা দেবে ঢাকা।

২০১২ সালে নয়াদিল্লিতে প্রথম জেসিসি বৈঠকে বসে বাংলাদেশ-ভারত। গত ১০ বছরে মোট ছয়বার জেসিসি বৈঠক হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে করোনা মহামারির মধ্যে ঢাকার নেতৃত্বে ভার্চুয়ালি জেসিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দুই দেশের করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সপ্তম জেসিসি বৈঠক নিয়ে বার বার অনিশ্চয়তা দেখা যায়। প্রায় ১৮ মাস পরে সপ্তম বারের মতো বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলো।

জেসিসি বৈঠক শেষে মঙ্গলবার (৩১ মে) ড. মোমেনের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

এনআই/আইএসএইচ