দুই সিটির কাউন্সিলরদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন
নাগরিক সেবা নিশ্চিতে ঢাকার দুই সিটির ওয়ার্ড কাউন্সিলকে সম্পৃক্ত করে এলাকাভিত্তিক বহুমুখী সমস্যার দিকে দৃষ্টি দেওয়া জরুরি। পাশাপাশি ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন। সোমবার (৩০ মে) ভার্চুয়ালি আয়োজিত এক নগর সংলাপে বক্তারা এ কথা বলেন।
ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) ‘ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দুই বছর : নাগরিকদের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এ সংলাপের আয়োজন করে।
বিজ্ঞাপন
সংলাপে বক্তারা বলেন, ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বিগত দুই বছরে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। তবে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক খননজনিত দুর্ভোগ, খেলার মাঠ-গণপরিসর-উদ্যানের স্বল্পতা, ওয়ার্ড কাউন্সিলের মাধ্যমে জনভোগান্তি কমানোর কার্যকর উদ্যোগের অভাবসহ স্থানিক জলাবদ্ধতা, বর্জ্যের অব্যবস্থাপনা, মশার উৎপাতসহ নানা সমস্যা নাগরিক জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করছে।
তারা বলেন, ঢাকা মহানগরের অনেক উন্নত এলাকায় মানসম্মত নাগরিক সেবার যেমন দেখা মিলছে, ঠিক তেমনি এ নগরের অনেক ওয়ার্ডে নাগরিক সেবার একেবারেই বেহাল দশা। এ বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলকে সম্পৃক্ত করে এলাকাভিত্তিক বহুমুখী সমস্যার দিকে দৃষ্টি দেওয়া জরুরি। পাশাপাশি মেয়রদের আন্তরিক উদ্যোগের পাশাপাশি ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।
বিজ্ঞাপন
ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) আয়োজিত নগর সংলাপের মূল প্রবন্ধে ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক পরিকল্পনাবিদ ড.আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়ররা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া কিছু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে এমন অনেক প্রতিশ্রুতি আছে,। যেগুলোর বাস্তবায়নে এখনো তেমন কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। ওয়ার্ড কাউন্সিলকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ না থাকায় এলাকাভিত্তিক অনেক সমস্যার সঠিক সমাধান হচ্ছে না, পাশাপাশি জনভোগান্তিও বাড়ছে।
আইপিডির পরিচালক পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, গত দুই বছরে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা ও ড্রেনেজ সমস্যা সমাধানে বেশ প্রশংসনীয় উদ্যোগ পরিলক্ষিত হলেও নাগরিক সেবা প্রদানে তাদের আরও উদ্যোগ বাড়াতে হবে। ফুটপাত ও পায়ে হাঁটার জন্য পর্যাপ্ত সুবিধাদি দেওয়াসহ এলাকভিত্তিক গণপরিসর করার কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা প্রকল্পের (ড্যাপ) পরামর্শক পরিকল্পনাবিদ আবু মুসা জিন্নাহ বলনে, মিরপুরের বাউনিয়া, রূপনগর এলাকায় বিভিন্ন মহাপরিকল্পনায় চিহ্নিত খেলার মাঠ, জলাশয়গুলো অবৈধভাবে দখল করা হলেও নগর কর্তৃপক্ষগুলো যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে থাকা উদ্যান, খোলা জায়গাসমূহে নতুন করে ভবন তৈরি করে নগরে শিশু-কিশোরদের বিনোদন সুবিধাদি একেবারে সংকুচিত করে ফেলা হচ্ছে। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এসব স্থান সংরক্ষণের উদ্যোগ প্রয়োজন।
এএসএস/আরএইচ