চট্টগ্রামের যে বাসে ১৯ মে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল সেই বাস ব্যবহার করে ২০ মে ছিনতাই করা হয়েছে। আর এই ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (২ জুন) সকালে দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে বন্দর থানা পুলিশ। পুলিশ বলছে, পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার বাস চালক ও হেলপার এবং আজকে আটক দুইজন একই চক্রের সদস্য।  

গ্রেপ্তার দুইজন হলেন, গিয়াস উদ্দিন নয়ন (২১) ও সীমান্ত দত্ত (২১)।

বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কিশোর মজুমদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, পলাশ কান্তিদে নামের এক ভুক্তভোগী ২০ মে ইপিজেড থানার ফ্রি-পোর্ট থেকে সিটি সার্ভিস বাসে উঠে। পরে নিমতলা বিশ্বরোড মোড়ে পৌঁছে বাসের ড্রাইভারকে নামিয়ে দেওয়ার জন্য বলে। কিন্তু বাসের ড্রাইভার হালিশহর থানার বড়পোল মোড়ে নামিয়ে দিবে বলে বড়পোলের দিকে রওয়ানা দেয়। এসময় বাসের ড্রাইভারসহ যাত্রী বেশে বাসে থাকা অন্য ৩ জন ছিনতাইকারী ভিকটিম পলাশকে ছুরিকাঘাত করে নগদ ১০ হাজার টাকা, ২ মোবাইল এবং বিকাশে থাকা ৪০ হাজার ৮০০ টাকা তুলে নিয়ে যায়। 

তিনি আরও বলেন, পরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে ভিকটিম পলাশকে খুলশী থানার লালখান বাজার ফ্লাইওভারের উপর নামিয়ে দিয়ে তারা পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পর ভিকটিম একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়।  পরে ১ জুন বন্দর থানায় এসে পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। এই ঘটনায় ভিকটিম পলাশ বাদী হয়ে বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কিশোর মজুমদার আরও বলেন, ভিকটিম পলাশ কান্তি দের অভিযোগ পাওয়ার পর তথ্য প্রযুক্তি ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে কয়েক ঘণ্টার অভিযান শেষে বৃহস্পতিবার সকালে দুইজনকে চান্দগাঁও এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, বাকলিয়া থানা এলাকায় চলন্ত বাসে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় ব্যবহৃত বাসটি এই ছিনতাইয়ের ঘটনায়ও ব্যবহার করা হয়েছে। গাড়িটির নিয়মিত চালক গ্রেপ্তার মো. গিয়াস উদ্দিন নয়ন। তিনি বাসটি রাতে সহযোগী আসামিদের কাছে ভাড়া দিতেন। আর আসামিরা শহরের বিভিন্ন স্থানে চলন্ত বাসে ছিনতাই কার্যক্রম চালাত। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাসটির পেছনে নম্বরপ্লেট নেই। সামনের নম্বরপ্লেটটি থাকত বাম্পারে আড়ালে। ১৯ মে নগরের বাকলিয়া রাহাত্তারপুল এলাকায় এই বাসেই চলন্ত অবস্থায় এক পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। পরে চালককে ঘুষি দিয়ে লাফ দিয়ে পড়ে পোশাককর্মী। বাস থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হন ওই পোশাককর্মী। ছয় দিন পর জ্ঞান ফিরলে পুলিশকে ঘটনার বিস্তারিত জানান তিনি। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২৫ মে রাতে হাটহাজারীর কুয়াইশ এলাকা থেকে বাসচালক আনোয়ার হোসেন এবং তার সহকারী জনি দাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই সঙ্গে জব্দ করা হয় ঘটনায় ব্যবহার করা বাসটি। 

এছাড়া বাসটি দিয়ে ২২ মে রাতে পাহাড়তলী থানার অলংকার মোড়ে ছিনতাইয়ে ব্যবহার করা হয়েছিল। 

কেএম/আইএসএইচ