চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকার বাসিন্দা ফারুক কাজ করতেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে। শনিবার কাজে যোগ দিয়েছিলেন। আগুনের ঘটনার পর তার খোঁজ মিলছে না। বন্ধ রয়েছে তার সেলফোনও। এ অবস্থায় চরম আতঙ্কে রয়েছে ফারুকের পরিবার।

এদিকে বাবাকে খোঁজতে রাত থেকে বিএম কনটেইনার ডিপো ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছোটাছুটি করছেন তার মেয়ে ফাতেমা আক্তার। 

ঢাকা পোস্টকে ফাতেমা বলেন, আমার বাবা শনিবার কাজে যোগ দেন। আগুন লাগার সংবাদ পাওয়ার পর থেকে বাবার ফোনে কল দিচ্ছি কিন্তু বাবার মোবাইল বন্ধ পাচ্ছি। রাতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম সেখানেও তার খোঁজ পাইনি। সকাল থেকে এসে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে খুঁজছি কিন্তু কোনো সন্ধান পাইনি। আপনারা আমার বাবাকে খোঁজে দেন, এই কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ফাতেমা। 

এদিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সরকারহাট এলাকা থেকে ছোট ভাই মনির হোসেনকে খোঁজতে এসেছেন আবদুল করিম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সন্ধ্যা ৭টার দিকে কাজে যোগ দেয় মনির। বিএম ডিপোতে অপারেটর হিসেবে কাজ করত সে। রাতে ৯টার দিকেও স্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে মনিরের। কিন্তু সাড়ে ৯টায় আগুন লাগার পর থেকে আর কথা হয়নি কার। হাসপাতালে খুঁজছি সকাল থেকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন খোঁজ পাইনি।

তিনি বলেন, মনির ৮ মাসে আগে বিয়ে করেছে। মনিরের বউ চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার যদি কিছু হয় তাহলে অনাগত সন্তানের কী হবে?

অন্যদিকে রোববার সকাল থেকেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বজনদের খোঁজে ভিড় করছেন অনেকেই। এর মধ্যে কেউ কেউ স্বজনের খোঁজ পেয়েছেন হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে, কাউকে পাচ্ছেন মর্গে। 

উল্লেখ্য, শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুনের ঘটনায় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৮৫ জন।

ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ করছেন।

কেএম/এসকেডি